শ্রীকৃষ্ণকে আনয়নের জন্য কংস কর্তৃক অক্রুরকে প্রেরণ-কৃষ্ণ লীলা কাহিনী - শ্রীমদ্ভগবদ গীতা যথাযথ বাংলা

নতুন পোষ্ট

Add

মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২১

শ্রীকৃষ্ণকে আনয়নের জন্য কংস কর্তৃক অক্রুরকে প্রেরণ-কৃষ্ণ লীলা কাহিনী

 
কৃষ্ণ লীলা

বৃন্দাবন থেকে শ্রীকৃষ্ণকে মথুরা আনার জন্য কংস কর্তৃক অক্রুরকে প্রেরণ-কৃষ্ণ লীলা কাহিনী

বৃন্দাবন সব সময় কৃষ্ণভাবনাময় ছিল। সেখানে প্রতিটি ব্রজবাসী শ্রী কৃষ্ণ লীলা স্মরণ করে সব সময় দিব্য আনন্দ-সাগরে নিমগ্ন থাকতেন। কিন্তু এই জড় জগৎ এতই কলুষিত যে, এমন কি সেই বৃন্দাবনেও অসুরেরা সেখানকার শান্তিময় পরিবেশ বিঘ্নিত করে উৎপাত সৃষ্টি করার চেষ্টা করত।

সেখানে বিরাট ষাঁড়ের মতাে বড় বড় শিং ও বিশাল দেহধারী অরিষ্ট নামে এক অসুর ছিল। সে একদিন পায়ের খুর দিয়ে মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে বৃন্দাবনে প্রবেশ করলে বনভূমি কেঁপে উঠল। তখন মনে হল যেন এক ভূমিকম্প হয়ে গেল। 
 
অসুরটা ভয়ঙ্করভাবে গর্জন করতে লাগল এবং নদীর তীরে মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে গ্রামের মধ্যেই ঢুকে পড়ল। সেই ষাঁড়ের গর্জন ছিল এমনই ভয়ানক যে, তা শুনে গর্ভবতী ব্রজনারী ও গাভীদের গর্ভপাত হয়েছিল। পাহাড়ের উপর মেঘ যেমন ভেসে বেড়ায়, ঠিক সেই রকম অরিষ্টাসুরের ঐ শক্তিমান বিশাল দেহের উপরে মেঘ যেন ভেসে বেড়াচ্ছিল। 
 
ভীষণ রূপ ধারণ করে অরিষ্টাসুর যখন বৃন্দাবনে প্রবেশ করল, তখন ব্রজের সমস্ত স্ত্রী-পুরুষ ভয়ে ত্রস্ত হয়ে উঠল। গাভী এবং অন্যান্য পশুরা ভয়ে গ্রাম থেকে পালিয়ে গেল।

অবস্থা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠল! আর সমস্ত ব্রজবাসী ভয়ে চিৎকার করে বলতে লাগল, 'কৃষ্ণ! কৃষ্ণ! দয়া করে আমাদের রক্ষা কর!' গাভীগুলােকে ভয়ে পালিয়ে যেতে দেখে শ্রীকৃষ্ণ তখনই বলে উঠেছিলেন, 'ভয় কর না।
 
তারপর শ্রীকৃষ্ণ অরিষ্টাসুরের সামনে উপস্থিত হয়ে বললেন, সমস্ত জীবকুলের মধ্যে তুমি হচ্ছ সবচেয়ে নিকৃষ্টতম প্রাণী। তুমি গােকুলবাসীদেরকে ভীত সন্ত্রস্ত করে তুলছ কেন? এই কাজ করে তােমার কি লাভ হবে? তুমি যদি আমার শক্তি যাচাই করতে এসে থাক, তা হলে আমি তােমার সঙ্গে লড়াই করতে প্রস্তুত আছি।
 
এইভাবে শ্রীকৃষ্ণ অরিষ্ঠাসুরকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আহ্বান করলে সে খুব রেগে গেল। তখন শ্রীকৃষ্ণ তার এক বন্ধুর কাধে হাত রেখে সেই ষাঁড়টির সামনে এসে দাঁড়ালেন। তা দেখে দারুণ রেগে গাভী রূপী অরিষ্টাসুর শ্রীকৃষ্ণের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। 
 
সে পা দিয়ে মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে যখন তার লেজ তুলল, তখন মনে হচ্ছিল যেন সেই লেজের চারদিক মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে গেছে। রাগে কাপতে কাপতে তার চোখ দুটো রক্তবর্ণ হয়ে উঠেছিল। ইন্দ্রের বজ্রের মতাে তার শিং দু'টিকে শ্রীকৃষ্ণের দিকে উঁচিয়ে সে তাকে আঘাত করতে গেল। 
 
কিন্তু তখনই শ্রীকৃষ্ণ তার শিং দুটো চেপে ধরলেন এবং বিশাল একটা হাতি যেমন তার শত্ৰু অন্য একটি হাতিকে সহজেই প্রতিহত করে, ঠিক সেইরকম ভাবে শ্রীকৃষ্ণও তাকে উল্টিয়ে দূরে নিক্ষেপ করলেন। তখন অরিষ্টাসুরকে অত্যন্ত ক্লান্ত দেখাচ্ছিল এবং সে খুব ঘামছিল।
 
তবু সে সাহস অবলম্বন করে আবার উঠে দাঁড়াল। ক্রুদ্ধ হয়ে সে আবার শ্রীকৃষ্ণকে আঘাত করল এবং দীর্ঘশ্বাস গ্রহণ করে সে শ্রীকৃষ্ণের দিকে এগিয়ে গেল। কিন্তু আবার শ্রীকৃষ্ণ তার শিং দুটো ধরে তাকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এবং তার শিং দুটো ভেঙে ফেললেন।
 
জলে ভেজা কাপড়কে ধােয়ার সময় যেমনভাবে নিংড়ানাে হয়, শ্রীকৃষ্ণ ঠিক সেভাবেই তার দেহে পদাঘাত করতে শুরু করলেন। ফলে, অরিষ্টাসুর মাটিতে পড়ে গেল এবং ভয়ঙ্করভাবে তার পা দুটো ছুঁড়তে শুরু করল। আর মল-মূত্র ত্যাগ করে সে রক্ত বমন করতে করতে চোখ উল্টে দিয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হল। 
 
শ্রীকৃষ্ণের এই অদ্ভুত কাজ দেখে স্বর্গলোক থেকে দেবতারা তার উপর পুষ্পবর্ষণ করছিলেন। ইতিমধ্যেই শ্রীকৃষ্ণ ব্রজবাসীদের সকলের জীবন ও প্রাণ স্বরূপ হয়ে উঠেছিলেন। তারপর এই বৃষাসুরকে বধ করে তিনি তাদের সকলেরই চোখের মণি হয়ে উঠলেন। 
 
শ্রীবলরামকে নিয়ে বিজয়ীর মতাে তিনি বৃন্দাবনে প্রবেশ করলে, ব্রজবাসীরা মহা আনন্দে শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীবলরামের জয়গান শুরু করেন। যখন কেউ আশ্চর্যজনক কোন কাজ করে তখন তার আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবরা স্বভাবতই এইভাবে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন।

এই ঘটনার পর দেবর্ষি নারদ শ্রীকৃষ্ণের রহস্য প্রকাশ করেন। নারদ মুনি সাধারণত দেবদর্শন' নামে অর্থ হচ্ছে একমাত্র দেবতা বা সমশ্রেণীভুক্তরাই দর্শন করতে পারেন। তিনি তখন কংসের কাছে কংস যদিও দেবতাদের সমপর্যায়ভুক্ত ছিল না তবুও সে দর্শন লাভ করেছিল। 
 
তা ছাড়া কংস এমন কি শ্রীকৃষ্ণের দর্শনও পেয়েছিল। কিন্তু সাধারণত শুদ্ধ দ্রষ্টারাই ভগবান ও তার ভক্তের দর্শন লাভ করতে পারেন। অবশ্য শুদ্ধ সঙ্গের প্রভাবে কোন মানুষ এক ধরনের অতীন্দ্রিয় আশীর্বাদ লাভ করতে পারে। তাকে বলা হয় 'অজ্ঞাত-সুকৃতি। 
 
এমন কি, পারমার্থিক উন্নতির কারণ বুঝতে পারলেও, শুধু ভগবদ্ভক্তকে দর্শনের ফলেই তিনি উন্নতি করে চলেন। নারদ মুনির উদ্দেশ্য ছিল তাড়াতাড়ি কার্য সাধন করা। শ্রীকৃষ্ণ অসুরদের বিনাশ করতে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং কংস ছিল তাদের মধ্যে প্রধান।
 
নারদ মুনি এই কাজ দ্রুত শেষ করতে চেয়েছিলেন। তাই সমস্ত সংবাদ নিয়ে তখনই তিনি কংসের কাছে হাজির হলেন এবং বললেন, “বসুদেবের অষ্টম পুত্র তােমাকে নিহত করবে। সেই অষ্টম পুত্র হচ্ছে কৃষ্ণ। বসুদেবের কৌশলে তুমি ভুল করে তার অষ্টম সন্তানকে একটি মেয়ে বলে মনে করেছ। 
 
প্রকৃতপক্ষে, নন্দ মহারাজের পত্নী যশােদার একটি মেয়ে হয়েছিল। আর বসুদেব তাকে বদল করেছিল শ্রীকৃষ্ণের সাথে। তাই তুমি ভুল বুঝেছিলে। কৃষ্ণ হচ্ছে বসুদেবের পুত্র, বলরামও তাই। তােমার অত্যন্ত নিষ্ঠুর প্রকৃতির ভয়ে বসুদেব তােমার চোখের আড়ালে তাদের বৃন্দাবনে লুকিয়ে নারদ কংসকে আরও জানালেন,
 
"আত্মপরিচয় গােপন করে কৃষ্ণ ও বলরাম নন্দ মহারাজের কাছে আছে। বৃন্দাবনের শিশুদের হত্যা করার জন্য তােমার সহচর যে সব অসুরদের তুমি পাঠিয়েছিলে, কৃষ্ণ ও বলরামের হাতে তারা সকলেই নিহত হয়েছে।"

নারদ মুনির কাছে এই সংবাদ পাওয়া মাত্রই কংস বসুদেবকে তার কপটতার জন্য তীক্ষ্ণ তরবারি দিয়ে হত্যা করতে উদ্যত হল। কিন্তু নারদ মুনি তাকে আসস্থ করে বললেন, “বসুদেব তাে তােমাকে হত্যা করবে না। তাকে হত্যা করার জন্য তুমি এত অস্থির হচ্ছ কেন? 
 
বরং কৃষ্ণ এবং বলরামকে হত্যা করতে চেষ্টা কর।” কিন্তু কংস তার ক্রোধানল তৃপ্ত করার জন্য বসুদেব ও তার পত্নীকে বন্দী এনে লৌহ শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখল।
 
এই নতুন খবর পাওয়া মাত্রই কংস কেশীদানবকে তৎক্ষণাৎ ডেকে পাঠাল এবং তাকে বৃন্দাবনে গিয়ে শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীবলরামকে তখনই মথুরায় নিয়ে আসতে হুকুম করল। আসলে, শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীবলরামের হাতে নিহত হয়ে মুক্তি লাভের জন্যই কেশীকে বৃন্দাবনে যেতে কংস আদেশ করেছিল। 
 
তারপর কংস চাণুর, মুষ্টিক, শল, তােশল প্রভৃতি দক্ষ ডেকে পাঠাল এবং তাদের বলল, আমার কথা মন দিয়ে শােনবার চেষ্টা কর। বৃন্দাবনে নন্দ মহারাজের কাছে কৃষ্ণ ও বলরাম দু'ভাই রয়েছে। তারা আসলে বসুদেবের দুই ছেলে। 
 
তােমরা জান, আমার অদৃষ্টে আছে যে, কৃষ্ণের হাতে আমি নিহত হব, এই রকম এক ভবিষ্যদ্বাণী হয়েছিল। তােমাদের অনুরােধ করছি, একটি মল্লযুদ্ধের আয়ােজন কর। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এই মহােৎসব দেখতে লােক আসবে। আমি ঐ বালককে এখানে আনার আয়ােজন করছি। তােমরা সেই মল্লভূমিতেই তাদের বধ করতে চেষ্টা করবে।

উত্তর ভারতের লােকেরা আজও এই ধরনের মল্লক্রীড়া উপভােগ করেন এবং শ্রীমদ্ভাগবতের বর্ণনা থেকে জানা যায়, ৫০০০ বছর আগেও এই মল্লক্রীড়া জনপ্রিয় ছিল।
 
কংস এই রকম এক মল্লক্রীড়া আয়ােজনের চিন্তা করল এবং লােকজন আমন্ত্রণের ব্যবস্থা করল। এ ছাড়া সে হাতির মাহুতদেরও বলে দিয়েছিল, মল্লভূমির ফটকে কুবলয়াপীড় নামক হাতিটি অবশ্যই হাজির থাকে এবং কৃষ্ণ আর বলরাম সেখানে উপস্থিত হওয়া মাত্র তাদের ধরে যেন বধ করে।

শিবপূজার আয়ােজন করে যজ্ঞে পশুবলি দিতেও কংস তার বন্ধুদের পরামর্শ দিয়েছিল। একাদশীর তিনদিন পর সেই তিথিতে শিবের আরাধনার জন্য এই যজ্ঞের অনুষ্ঠান করা হয়। দেবাদিদেব শিবের একটি অংশ প্রকাশের নাম হচ্ছে কালভৈরব। 
 
শিবের এই রূপের উপাসনা করে অসুরেরা পশুবলি দিয়ে থাকে। ভারতের বৈদ্যনাথ ধাম নামে জায়গাটিতে এখনও এই রীতি প্রচলিত আছে; সেখানে আজও আসুরিক ভাবাপন্ন লােকেরা 'কালভৈরব' বিগ্রহের সামনে পশুবলি দিয়ে থাকে। 
 
কংস এই অসুরদেরই শ্রেণীভুক্ত ছিল। সে একজন সুচতুর ছিল। তাই খুব দ্রুত সে তার অসুর-বন্ধুদের দিয়ে শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীবলরামকে হত্যার ব্যবস্থা করে ফেলল।

তারপর কংস যদুবংশের অক্রুরকে ডেকে পাঠাল। ঐ যদুবংশেই তনয় রূপে শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন। কংসের সঙ্গে অক্রুর দেখা করতে এলে, কংস সবিনয়ে তার সঙ্গে করমর্দন করে তাকে বলল, "প্রিয় অক্রুর! সত্যিই, ভােজ ও যদু বংশে তােমার চেয়ে ভাল বন্ধু আমার আর কেউই নেই। তুমি অত্যন্ত উদারহৃদয় মানুষ।
 
তাই বন্ধু হয়ে তােমার কাছে ভিক্ষা চাইছি, দেবরাজ ইন্দ্র যেমন বিষ্ণুর শরণাগত হন, আমিও ঠিক সে রকমই তােমার শরণাপন্ন হয়েছি।

আমি তােমাকে অনুরােধ করছি—এখনই তুমি বৃন্দাবনে যাও এবং সেখানে কৃষ্ণ আর বলরাম নামে দু'টি বালকের খোঁজ কর। তারা নন্দ মহারাজের পুত্র। এই চমৎকার রথটি তুমি নাও, বালক দু’টিকে নিয়ে আসার জন্যই বিশেষভাবে এটি তৈরি হয়েছে। 
 
এখনই তুমি তাদের এখানে নিয়ে এস, তােমাকে আমার এই অনুরােধ। সেই দু'টি ছেলেকে বধ করাই আমার মতলব। ফটকের কাছে কুবলয়াপীড় নামে প্রকাণ্ড হাতিটি থাকবে এবং সেখানে ওরা আসা মাত্রই হাতিটি তাদের বধ করতে পারবে বলে আমি মনে করি।
 
কিন্তু কোনভাবে তারা এই ফাদ এড়াতে পারলেও মল্লবীরদের সামনে তারা পড়বেই এবং তাদের হাতেই বধ হবে। এই হচ্ছে আমার পরিকল্পনা। এই দুটি বালককে হত্যার পর ভােজ ও বৃষ্ণি বংশের আসল দুটি লােক নন্দ ও বসুদেবকে আমি হত্যা করব।
 
আমার বাবা উগ্রসেন এবং তার ভাই দেবককেও আমি হত্যা করব। কারণ তারা আসলে আমার শত্রু এবং তারা আমার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সকল কার্যের প্রতিবন্ধক। এইভাবে আমি আমার সমস্ত শত্রুদের থেকে মুক্ত হব।
 
জরাসন্ধ হচ্ছে আমার শশুর। দ্বিবিদ নামে আমার এক বিশেষ বানর বন্ধু আছে। দেবতাদের সমর্থক যত রাজা আছে এ জগতে তাদের সকলকেই এদের সাহায্যে বধ করা সহজ হবে। এই হচ্ছে আমার পরিকল্পনা। এইভাবে আমি আমার সমস্ত বিরুদ্ধাচারীদের কবল থেকে মুক্ত হব এবং তারপর অবাধে পৃথিবী শাসন করব। 
 
দেবতাদের সমর্থক রাজাদের বিরুদ্ধে যখন আমি যুদ্ধ করব, তখন আমারই অন্তরঙ্গ সম্বর, নরকাসুর ও বাণাসুরদের মতাে বন্ধুরাও বিশেষভাবে আমাকে সাহায্য করবে। এইভাবে নিশ্চয় আমি সমস্ত শত্রু থেকে মুক্ত হব। তাই দয়া করে তুমি এখনই বৃন্দাবনে যাও এবং মল্লক্রীড়ায় আনন্দ লাভ করতে আর মথুরার শােভা দেখতে, এখানে আসার জন্য বালক দু'টিকে তুমি মাতিয়ে তােল।”

কংসের এই পরিকল্পনার কথা শুনে অক্রুর বললেন, “হে মহারাজ, আপনার কুটনৈতিক কাজকর্মের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আপনার এই পরিকল্পনা খুব চমৎকার। তবে আপনাকে খানিকটা বিচার-বুদ্ধি খাটাতে হবে, নয়তাে আপনার এই পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে। 
 
কেননা মানুষ যা চায়, ভগবানই তার ঘটনা- ঠিক করে দেন। আমরা বড় বড় পরিকল্পনা করতে পারি, কিন্তু পরম নিয়ন্তার অনুমােদন ছাড়া তা সবই ব্যর্থ হয়। এই জড় জগতে সকলেই জানে, এক অপ্রাকৃত শক্তি হচ্ছে সমস্ত ঘটনার পরম নিয়ন্তা। 
 
উর্বর মস্তিষ্কের সাহায্যে কেউ বড় বড় পরিকল্পনা রচনা করতে পারে, কিন্তু তার জানা উচিত। যে, সে তারই কর্মফলে সুখ ও দুঃখ ভােগ করে। তবে আপনার এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আমার কিছুই বলার নেই। বন্ধু হিসেবে আমি আপনার আদেশ পালন করব এবং আপনার অভিরুচি মতাে কৃষ্ণ ও বলরামকে আমি এখানে নিয়ে আসব।

এইভাবে তার বন্ধুকে পরামর্শাদি দেবার পর কংস চলে গেল, এবং অক্রুর বৃন্দাবনের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন