চৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষা ও নামসংকীর্তনের মাহাত্ম্য

 

“হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে,
হরে রাম হরে রাম, রাম রাম হরে হরে।”

 

চৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষা ও নামসংকীর্তনের মাহাত্ম্য

গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক, প্রেম-ভক্তির অবতার, মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য দেব বিশ্বব্যাপী ভগবান নামসংকীর্তনের মাহাত্ম্য প্রচার করেছিলেন। তাঁর জীবন, শিক্ষা ও কীর্তন আজও মানবসমাজকে অনন্ত শান্তি, প্রেম ও ভক্তির আলোয় আলোকিত করছে।

চৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাব

১৪৮৬ খ্রিষ্টাব্দে (ফাল্গুন পূর্ণিমা তিথি) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু শ্রীমৎ জগন্নাথ মিশ্র ও শচী দেবীর গৃহে নবদ্বীপে আবির্ভূত হন। তাঁর জন্মের পর থেকেই নবদ্বীপ নগর আনন্দে ভরে ওঠে। শৈশবে তিনি ছিলেন “নিমাই” নামে খ্যাত।

মহাপ্রভুর শিক্ষা

মহাপ্রভুর মূল বাণী ছিল—

  • ভগবানের পবিত্র নাম সর্বত্র প্রচার করা

  • জাতি, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে সমানভাবে গ্রহণ করা

  • কীর্তন, ভজন ও সৎসঙ্গের মাধ্যমে ঈশ্বর-প্রেমে জীবন উৎসর্গ করা

     

তিনি বলেছিলেন, **“কীর্তন প্রধানে সর্বসিদ্ধি হয়”— ভগবানের নামসংকীর্তনই জীবনের পরম লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম।

নামসংকীর্তনের মহিমা

চৈতন্য মহাপ্রভু নিজে হরিনাম সংকীর্তনের মাধ্যমে সমগ্র বাংলার গলি-প্রান্তরে ভক্তির বার্তা পৌঁছে দেন। তাঁর কীর্তনের শক্তি এত প্রবল ছিল যে, পাপী, নাস্তিক, দুষ্কৃতিকারী সকলেই ভগবানভক্ত হয়ে উঠত।

তিনি ঘোষণা করেছিলেন:
“হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করলে এই কলিযুগে মুক্তি, ভক্তি ও কৃষ্ণপ্রেম লাভ হয়।”

মহাপ্রভুর মহিমা কীর্তন

  • তিনি প্রেমভক্তির অবতার

  • দীন-হীনের ত্রাণকর্তা

  • জগতে নামসংকীর্তনের পথপ্রদর্শক

  • মানবতার শিক্ষক

  • ভক্ত হৃদয়ে কৃষ্ণপ্রেমের অমৃত প্রবাহ

উপসংহার

চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবন আমাদের শেখায় যে, ভগবানের প্রেমই জীবনের সর্বোচ্চ লক্ষ্য। আজও তাঁর নাম, তাঁর কীর্তন, তাঁর উপদেশ লক্ষ লক্ষ ভক্তের হৃদয়ে প্রেমের দীপ জ্বালিয়ে রেখেছে।

চলুন, আমরা সকলে মহাপ্রভুর পথ অনুসরণ করি, নামসংকীর্তনে যুক্ত হই এবং ভক্তির মাধ্যমে জীবনকে সার্থক করি।

 আরও পড়ুনঃ

* কীভাবে ভগবানকে জানা যায়? 

* সকল ভয় থেকে পরিত্রাণের উপায় 

 

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url