প্রকৃত ভালবাসা বা সত্যিকারের ভালবাসা কি?
হৃদয়ের শূন্যতা পূরনে মানুষ এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে উদগ্রীব। মানুষ প্রকৃত ভালবাসার প্রয়োজনীয়তা উপলদ্ধি করে। আমরা চাই অন্যেরা আমাদের উৎসর্গ উপলব্ধি করুক। আমরা প্রশংসিত হতে চাই, আমরা চাই অন্যেরা আমাদের অভাব অনুভব করুক, আর আমাদের পছন্দ-অপছন্দের কথাও মাথায় রাখুক। কিন্তু আমাদের সমস্যা হলো প্রশংসিত হতে আমাদের একটা ভয় ও জড়াতা কাজ করে; তাই আমরা খুব অল্প কিছু মানুষের কাছেই এসব প্রত্যাশা করি, সবার কাছে নয়।
পৃথিবীতে যে একটিমাত্র উপায়ে আমরা আমাদের খুশির সীমা মাপতে পারি, তা হলো কতটা নির্ভেজালভাবে আমাদের হৃদয় তার প্রত্যাশিত ভালোবাসা পায়। জগদ্বিখ্যাত আধ্যাত্মিক গুরু এ.সি. ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ তাঁর ভক্তিরসামৃতসিন্ধু গ্রন্থের মুখবন্ধে এ বিষয়ের একটি ব্যাখ্যা করেছেন- আমাদের বেঁচে থাকার একটা অন্যতম সাধারণ নিয়ম হলো আমরা কাউকে না কাউকে ভালোবাসতে চাই।
সবারই একটা সাধারণ প্রবণতা হলো কেউ অন্য কাউকে ভালো না বেসে থাকতে পারে না। বাঘের মতো হিংস্র প্রাণীরও এই প্রবণতা রয়েছে। যে বিষয়টি আমরা প্রকৃতার্থে সুখী হতে পারি। আমাদের সমাজব্যবস্থা আমাদের দেশপ্রেম,পরিবার-প্রেম ও আত্মপ্রেম শেখায়;যাশেখায় না, তা হলো কোন ভালাবাসায় সবাই সুখী হতে পারে। আধ্যাত্মিক গুরুরা বলেন, কৃষ্ণপ্রেম হলো সর্বোচ্চ স্তরের ভালোবাসা।
এই দাবির অর্থ হলো তিনিই সর্বোত্তম, যিনি আমাদের হৃদয়ের ক্ষুধা উপলব্ধি ও তদনুযায়ী সাড়া দিতে পারেন। কৃষ্ণ হলেন সংবেদনশীল সত্তা; শ্রীমদ্ভাগবতের শেষের অধ্যায়গুলোতে আমরা তা প্রেমের সম্পর্ক সরাসরি উপলদ্ধি করতে পারি। তিনি নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন, মানুষ কীভাবে জড় জগতে সম্পর্কিত হতে পারে। সম্পর্কের বিভিন্ন স্তরের ব্যাখ্যার মাধ্যমে আমরা নিজেদের অবস্থান নির্ণয় করতে পারি। শ্রীকৃষ্ণ তাঁর ব্যাখ্যা শুরু করেন এভাবে-
পৃথিবীতে যে একটিমাত্র উপায়ে আমরা আমাদের খুশির সীমা মাপতে পারি, তা হলো কতটা নির্ভেজালভাবে আমাদের হৃদয় তার প্রত্যাশিত ভালোবাসা পায়। জগদ্বিখ্যাত আধ্যাত্মিক গুরু এ.সি. ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ তাঁর ভক্তিরসামৃতসিন্ধু গ্রন্থের মুখবন্ধে এ বিষয়ের একটি ব্যাখ্যা করেছেন- আমাদের বেঁচে থাকার একটা অন্যতম সাধারণ নিয়ম হলো আমরা কাউকে না কাউকে ভালোবাসতে চাই।
সবারই একটা সাধারণ প্রবণতা হলো কেউ অন্য কাউকে ভালো না বেসে থাকতে পারে না। বাঘের মতো হিংস্র প্রাণীরও এই প্রবণতা রয়েছে। যে বিষয়টি আমরা প্রকৃতার্থে সুখী হতে পারি। আমাদের সমাজব্যবস্থা আমাদের দেশপ্রেম,পরিবার-প্রেম ও আত্মপ্রেম শেখায়;যাশেখায় না, তা হলো কোন ভালাবাসায় সবাই সুখী হতে পারে। আধ্যাত্মিক গুরুরা বলেন, কৃষ্ণপ্রেম হলো সর্বোচ্চ স্তরের ভালোবাসা।
এই দাবির অর্থ হলো তিনিই সর্বোত্তম, যিনি আমাদের হৃদয়ের ক্ষুধা উপলব্ধি ও তদনুযায়ী সাড়া দিতে পারেন। কৃষ্ণ হলেন সংবেদনশীল সত্তা; শ্রীমদ্ভাগবতের শেষের অধ্যায়গুলোতে আমরা তা প্রেমের সম্পর্ক সরাসরি উপলদ্ধি করতে পারি। তিনি নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন, মানুষ কীভাবে জড় জগতে সম্পর্কিত হতে পারে। সম্পর্কের বিভিন্ন স্তরের ব্যাখ্যার মাধ্যমে আমরা নিজেদের অবস্থান নির্ণয় করতে পারি। শ্রীকৃষ্ণ তাঁর ব্যাখ্যা শুরু করেন এভাবে-
১. ব্যবসায়ীর ভালোবাসাঃ
এই প্রকারের ভালোবাসা স্বার্থপর; তারা শুধু তাদের নিজেদের প্রাপ্তি ছাড়া আর কোনোকিছুর তোয়াক্কা করে না। এই মানুষেরা খুব হিসাবী হয়ে থাকে; তারা ভাবে, আমি যতটুকা পাব, ঠিক ততটুকুই দেব। অনেক সময় আমরাও বলে থাকি-ওকে আমি এত কিছু দিলাম, আমি কী পেলাম? আবার আমরা আমাদের দেওয়া কোনো জিনিস বা আমাদের সামান্য কাজকে খুব বড় করে দেখাতে চাই এবং অন্যদের কাজ ও প্রদত্ত জিনিসক ছোট করে দেখাতে চাই; ঠিক যেন একজন সাধারণ ক্রেতার দোকানে গিয়ে দোকানির সাথে দরকষাকষি করার মতো।
বণিকেরা অব্শ্যই অন্যের ভালোমন্দ নিয়ে উদ্ভিগ্ন থাকেন না; তারা নিজেদের লাভের জন্যই সচেষ্ট। যখন একজন আরেকজনকে ভালোবাসে বিনিময়ে কিছু পাওয়ার আশায়, তখন দেওয়া-নেওয়ার এ ভালোবাসাটা অনেকটা মুখোশের মতো। একজন ব্যবসায়ী ভাবে, আমরা হিসাব শুধু আমার স্বার্খ নিয়ে, তুমি আমাকে কী দিতে পারবে? যখন আমরা এ ধরনের সম্পর্কে জড়াই, তখনই আমরা রাগান্বিত, পীড়িত, বিষণ্ন ও কষ্টে থাকি। কারণ, আমাদের আপনজনদের মধ্যেই কেউ হয়ত আমাদের সাথে আমাদের প্রত্যাশা-মতো আচরণ করেনি।
বণিকেরা অব্শ্যই অন্যের ভালোমন্দ নিয়ে উদ্ভিগ্ন থাকেন না; তারা নিজেদের লাভের জন্যই সচেষ্ট। যখন একজন আরেকজনকে ভালোবাসে বিনিময়ে কিছু পাওয়ার আশায়, তখন দেওয়া-নেওয়ার এ ভালোবাসাটা অনেকটা মুখোশের মতো। একজন ব্যবসায়ী ভাবে, আমরা হিসাব শুধু আমার স্বার্খ নিয়ে, তুমি আমাকে কী দিতে পারবে? যখন আমরা এ ধরনের সম্পর্কে জড়াই, তখনই আমরা রাগান্বিত, পীড়িত, বিষণ্ন ও কষ্টে থাকি। কারণ, আমাদের আপনজনদের মধ্যেই কেউ হয়ত আমাদের সাথে আমাদের প্রত্যাশা-মতো আচরণ করেনি।
২. শুভাকাঙ্ক্ষীঃ
এ ধরনের আত্মত্যাগী মানুষেরা বিনিময়ে প্রাপ্তি নিয়ে চিন্তা করেন না। এদের আবার দু’ভাগে বিভক্ত করা যায়ঃ
(ক) আত্ম-উপলব্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিত্বঃ
এই মানুষেরা আত্মতৃপ্ত থাকেন এবং অন্যদের আনন্দে আনন্দিত হন। আবার অন্যের দুঃখে দুঃখিত হন। এই আলোকিত মানুষেরা সংখ্যায় অনেক কম। কারণ, তারা ভালোবাসার চিন্ময় উৎসের সাথে সম্পর্কিত। যারা এঁদের সংস্পর্শে আসেন, তারা এ অবারিত ভালোবাসা পেয়ে থাকেন। উদাহরণস্বরূপ, প্রল্হাদ মহারাজের কথাই আসতে পারে, যার পিতা তারা সন্তান শুধু হরিভক্ত হবার কারণে অনেক ভয়ংকর পন্থায় তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। তারপরও সেই বালক তার পিতার একজন একনিষ্ঠ শুভাকাঙ্ক্ষী ছিল। এ ধরনের আত্ম-উৎসর্গীকৃত ভালোবাসা কোনো সাধারণ মানুষের কাছে আশা করা যায় না।
(খ) পিতা-মাতাঃ
পিতা-মাতা স্বাভাবিকভাবেই সন্তানদের ভালোবাসেন। সন্তানেরা অন্যায্য, কঠোর বা অনুচিত কথা বললে তাদের খুবই কষ্টদায়ক হয়। কিন্তু তাদের তিক্ত আচরণের পরও আমরা আমাদের ওপর নির্ভরশীল সন্তানদের ভালোবাসি।শ্রীল প্রভুপাদ বলেন, জড়জগতে চিন্ময় ভালোবাসার প্রায়-সমতুল্য ভালোবাসা হলো সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা। কারণ, সন্তান তো মায়ের শরীর থেকেই তৈরি হয়ে থাকে।
মা-কে জিজ্ঞেস করলে আমরা জানতে পারি, আমাদের জন্মের পর থেকে আমাদের পালন ও পরিচ্ছন্নতার জন্য তাকে কতই না কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু আত্ম-উপলব্ধিতে উত্তীর্ণ মানুষের ভালোবাসার প্রকার থেকে এই ভালোবাসা কিছুটা নিম্নস্তরের; কারণ, তা শুধু দেহগত ধারণামতে সীমাবদ্ধ। আমাদের ভালোবাসা আমাদের পরিবার, দেশ,গোত্র,ধর্মের মানুষের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকে। শুধু দেহগত ধারণাতে সীমাবদ্ধ এই ভালোবাসা আমাদের হৃদয়কে কখনোই পূর্ণনা দিতে পারে না।
৩. নিস্পৃহঃমা-কে জিজ্ঞেস করলে আমরা জানতে পারি, আমাদের জন্মের পর থেকে আমাদের পালন ও পরিচ্ছন্নতার জন্য তাকে কতই না কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু আত্ম-উপলব্ধিতে উত্তীর্ণ মানুষের ভালোবাসার প্রকার থেকে এই ভালোবাসা কিছুটা নিম্নস্তরের; কারণ, তা শুধু দেহগত ধারণামতে সীমাবদ্ধ। আমাদের ভালোবাসা আমাদের পরিবার, দেশ,গোত্র,ধর্মের মানুষের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকে। শুধু দেহগত ধারণাতে সীমাবদ্ধ এই ভালোবাসা আমাদের হৃদয়কে কখনোই পূর্ণনা দিতে পারে না।
এরপর শ্রীকৃষ্ণ নিরপেক্ষ মানুষদের ভালোবাসার কথা বলেন এবং এদের তিন ভাগে শ্রেণিবিন্যাস করেছেঃ
(ক) আত্মতুষ্টঃ
(ক) আত্মতুষ্টঃ
এই দলকে আত্ম-উপলব্ধিতে উত্তীর্ণ মানুষদের মধ্যে undergraduates বলা চলে; যুদিও এরা আত্মতুষ্ট, কিন্তু সম্পর্ক তৈরিতে এদের কোনো আগ্রহ নেই। এদের চেতনা সেই স্তরে উন্নীত,যেখানে তারা জড়জাগতিক বাসনা থেকে মুক্ত। তারা সর্বপ্রাণীতে সমদর্শী হয়ে থাকেন। তাই, কোনো কিছুতেই আকৃষ্ট হন না। তাদের কোনোরকম পার্থিব সম্পর্কের প্রয়োজন হয় না। কারণ, তারা নিজেতেই আনন্দিত থাকে।
(খ) জড়-জাগতিকতায় সন্তুষ্টঃ
এই দলভুক্ত মানুষের জড়-জাগতিক আসক্তি থাকে, কিন্তু তারা তাদের নিজেদের জড়বাসনা মেটানোর যতটুকু সাধ্য, তাতেই সন্তুষ্ট থাকে। এরা হচ্ছে অনেক সম্পদশালী মানুষের মতো, যার সুখ সাচ্ছন্দ্যের জন্য অনেক বিত্ত-বৈভব আছে,
হাজারো বন্ধু আছে, তাই তাদের আর কারো প্রয়োজনই নেই। কেউ তাদের আর ভালোবাসুক বা না বাসুক, তাতে তাদের কিছু আসে যায় না। এরা এদের বিত্ত-বৈভবে অন্ধ হয়ে থাকে এবং অন্যদের আচরণে কোনোরকম প্রভাবিত হয় না।
(গ) নির্দয়
এরা মূর্খ হয়ে থাকে। অন্যেরা তাদের জন্য কী করে বা তাদের জন্য অন্যদের উৎসর্গের এরা তোয়াক্কা্ও করে না। এরা এদের নিজেদের জগতে উদ্ভ্রান্ত থাকে। আমরাও আশেপাশে এরকম কিছু মানুষের দেখা পাই, যারা তাদের জন্য আমাদের উৎসর্গের ধার ধারে না। তারা অন্যের ডাকে সাড়া দিতে জানে না, তাদের প্রতি অন্যের ভালোবাসা উপলব্ধিও করতে পারে না।
৪.শত্রুভাবাপন্নঃ যারা তাদের উপকারীর প্রতি শত্রুতার ধারণা পোষণ করে; তারা শুধু উদাসীন নয়, বরং তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি বৈরীভাবাপন্ন। আপনি এমন মানুষের দেখা অবশ্যই পেয়েছেন, যাদের জন্য আপনি অনেক করেছেন, কিন্তু তাদের কাছ থেকে বিয়োগাত্মক সাড়া পেয়েছেন। এটা উৎপন্ন হয় একজন ব্যবসায়ীর ভালোবাসার মানসিকতা থেকে,যখন আমরা খুব বেশি ঋণী থাকি। আমরা তাদেরই হিংসা বা ঘৃণা করি, যারা আমাদের জন্য কিছু করে।
আমরা ভয় পাই, যদি আমরা তাদের উৎসর্গের সমান কিছু প্রতিদান দিতে না পারি। উদাহরণস্বরুপ, যদি আপনি কারো কাছ থেকে অনেক বড় অংকের টাকা ধার নেন, আর এটা উপলব্ধি করেন যে, আপনি কোনোদিনই তারা টাকা পরিশোধ করতে পারবেন না, আপনি খুব সম্ভবত ওই ব্যক্তিকে আপনার সামনে আর দেখতে চাইবেন না। যারা আমাদের প্রতি অত্যন্ত সদয় ও প্রসন্ন, তাদের প্রতি আমাদের সুতীব্র ঘৃণা তৈরি হতে পারে। কেন?
ভালোবাসা প্রতিদান দিতে অপারগতার অস্বস্তিকর অনুভূতি আমাদের ভীষণভাবে গ্রাস করে। তাই, সুখী হতে আমাদের নিজেদের কাছে সৎ থাকতে হবে, আর নিজেকে জিজ্ঞেস করতে হবে- আমার ভালোবাসা কোন স্তরের? এই প্রশ্নের উত্তর আমাদের বোঝাবে, আমার সাথে সবার সম্পর্ক আসলে কোন ধরনের। মানুষ সাধারণত সদম্ভ আচরণ করতে পছন্দ করে-“আমি এই কারণে তোমাকে ঘৃণা করতে পারি।” বা “এরা আমার লোক, আমার ভালোবাসা আর উৎসর্গ শুধু এদের জন্য।” বা “এতে আমার লাভ কী?”
পরিপূর্ণ সুখী হতে আমাদের জানতে হবে, কী করে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসা যায় ও আত্ম-উপলব্ধিতে উত্তীর্ণ হওয়া যায়। এসব দয়াবান মানুষের চিন্ময় ভালোবাসার উৎসের সাথেসম্পর্কিত, তাই তারা সীমাহীন ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারে। শ্রীকৃষ্ণের সাথে সম্পর্কিত হয়ে তারা আপনাতেই সন্তুষ্ট থাকে এবং অন্যের খুশিতে খুশি হন। সাধারণ মানুষেরা কাউকেকিছু দেওয়াকে কষ্টসাধ্য মনে করে; কারণ, তারা তাদের সীমাবদ্ধতার কথা জানে, তাই তারা নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে বাধ্য হয়।
কিন্তু ভক্তির প্রাচুর্যে ভরা এই উচ্চ পর্যায়ের যোগীরা অসীম-চিন্ময় পথের যোগসূত্র হতে পারেনম যখন তারা তাঁর সাথে যুক্ত হতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, একটা ল্যাপটপ শুধু ব্যাটারিতে চার্জ থকা অবস্থায় কাজ করতে পারে। কিন্তু যদি তা কোনো বিদ্যুতের উৎসের সাথে সংযুক্ত থাকে, তবে তা ঐ উৎসের জীবনকাল পর্যন্ত কাজ করতে পারে। অর্থাৎ, আমি যদি আমাকে উজাড় করে দিতে থাকি, আমি অবসন্ন হয়ে যাব, কিন্তু আমি যদি অনন্ত যোগানদাতা উৎসের সাথে সংযুক্ত থাকি, তবে আমি অবসন্ন হব না, কেননা আমি শুধু সেই উৎস থেকে সম্পদ হস্তান্তর করছি মাত্র। বৈদিক শাস্ত্র শ্রীকৃষ্ণকে সমস্ত শক্তির একমাত্র অশেষ আধার হিসেবে মূল্যায়ন করে।
শরীর-ইন্দ্রিয়ভিত্তিক ভ্রম-এর গন্ডী পেরিয়ে পরস্পরকে শ্রীকৃষ্ণের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে সহযোগিতা করার মাধ্যমে সম্পর্ক তৈরি করা যার উদ্দেশ্য; এই হলো নিঃশর্ত ভালোবাসার প্রকৃত অর্থ। নিঃশর্ত বিস্ময়কর এ জগতে সবকিছুই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, সব শর্তই হেঁয়ালি সর্বস্ব হয়, তাই শর্ত সাপেক্ষ পৃথিবীতে নিঃশর্ত ভালোবাসার প্রশ্নই কোথায়?
আপনার খুব কাছের একজনের কথা ভাবুন। তার কোন বিষয়ে আপনি আকর্ষিত? অবশ্যই শুধু তার শরীর নয়। তার শরীর থেকে আত্মাটি বের হয়ে গেলে একটি নিঃস্পন্দ শরীর পরে থাকবে মাত্র। কেউ নিশ্চই একটি মৃত দেহের শাথে সম্পর্ক স্থাপন করবে না? আপনি যাতে আকৃষ্ট তা হলো ঐ ব্যক্তির চেতনা, যাকে শ্রীকৃষ্ণ আত্মার শক্তি বলেছেন।প্রকৃত ভালোবাসা আত্মিক হয়ে থাকে।
অনেকেই soul mate শব্দটি ব্যবহার করে থাকে যেসব আপত-ভালোবাসার অনিত্য মানুষদের বোঝাতে। কথাটি আমাদের শরীরিক অস্তিত্বের অনেক গভীরে প্রবেশ করে। আত্মা আসলে কী? কেন আমাদের সম্পর্কগুলো দুঃখে পর্যবসিত হয়? কৃষ্ণ কে? আমরা যদি নিঃশর্ত ভালোবাসার স্বাদ আস্বাদনে উৎসাহী হই,তবে এই প্রশ্নগুলোর বিশদ ব্যাখ্যা প্রয়োজন। মানুষ সম্পর্ক-উন্নয়নের জন্য বই পড়ে, সভা-সেমিনারে যায়; কারণ,তারা মানুষের মূল্য বোঝে, তাই তাদের সাথে সম্পর্ক-উন্নয়নের সম্বন্ধে জেনেছেন, তারা শ্রীকৃষ্ণকে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ নিয়ন্তা মনে কারেন। শুধা তিনিই দেখাতে পারেন, কী করে আমরা পরস্পরের সাথে চিন্ময় সম্পর্কে সম্পর্কিত হতে পারি।
শ্রীকৃষ্ণ নিজে এ বিষয়গুেলো ব্যাখ্যা করেছেন ভগবতগীতায় (যাকে চিন্ময় সম্পর্ক স্থাপনের মূল যোগ্যতা বিবেচনা করা হয়) শ্রীমদ্ভাগবতমে (স্নাতকোত্তর যোগ্যতা) এবং চৈতন্যচরিতামৃতে (জড়জগতের সীমার বাইরে প্রেমের সম্পর্কে পিএইচডি সমমান)। আমরা দিকপাল সব পন্ডিত বা শিক্ষকদের একমাত্র গতি শ্রীকৃষ্ণকে কেন আমাদের অন্তরে তাঁকে ব্যাখ্যা করার সুযোগটাও দিই না? অতীত ও বর্তমানের যোগগুরু এই যোগ্যতার চূঁড়ায় আরোহণ করেছেন, তবে তা সম্ভব হয় সকল ভালোবাসার একমাত্র লক্ষ্যবস্তু শ্রীকৃষ্ণ ঠিক যে প্রেম-ভক্তিরপথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন সেই পথে।- হরেকৃষ্ণ,,,,,
আমরা ভয় পাই, যদি আমরা তাদের উৎসর্গের সমান কিছু প্রতিদান দিতে না পারি। উদাহরণস্বরুপ, যদি আপনি কারো কাছ থেকে অনেক বড় অংকের টাকা ধার নেন, আর এটা উপলব্ধি করেন যে, আপনি কোনোদিনই তারা টাকা পরিশোধ করতে পারবেন না, আপনি খুব সম্ভবত ওই ব্যক্তিকে আপনার সামনে আর দেখতে চাইবেন না। যারা আমাদের প্রতি অত্যন্ত সদয় ও প্রসন্ন, তাদের প্রতি আমাদের সুতীব্র ঘৃণা তৈরি হতে পারে। কেন?
ভালোবাসা প্রতিদান দিতে অপারগতার অস্বস্তিকর অনুভূতি আমাদের ভীষণভাবে গ্রাস করে। তাই, সুখী হতে আমাদের নিজেদের কাছে সৎ থাকতে হবে, আর নিজেকে জিজ্ঞেস করতে হবে- আমার ভালোবাসা কোন স্তরের? এই প্রশ্নের উত্তর আমাদের বোঝাবে, আমার সাথে সবার সম্পর্ক আসলে কোন ধরনের। মানুষ সাধারণত সদম্ভ আচরণ করতে পছন্দ করে-“আমি এই কারণে তোমাকে ঘৃণা করতে পারি।” বা “এরা আমার লোক, আমার ভালোবাসা আর উৎসর্গ শুধু এদের জন্য।” বা “এতে আমার লাভ কী?”
পরিপূর্ণ সুখী হতে আমাদের জানতে হবে, কী করে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসা যায় ও আত্ম-উপলব্ধিতে উত্তীর্ণ হওয়া যায়। এসব দয়াবান মানুষের চিন্ময় ভালোবাসার উৎসের সাথেসম্পর্কিত, তাই তারা সীমাহীন ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারে। শ্রীকৃষ্ণের সাথে সম্পর্কিত হয়ে তারা আপনাতেই সন্তুষ্ট থাকে এবং অন্যের খুশিতে খুশি হন। সাধারণ মানুষেরা কাউকেকিছু দেওয়াকে কষ্টসাধ্য মনে করে; কারণ, তারা তাদের সীমাবদ্ধতার কথা জানে, তাই তারা নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে বাধ্য হয়।
কিন্তু ভক্তির প্রাচুর্যে ভরা এই উচ্চ পর্যায়ের যোগীরা অসীম-চিন্ময় পথের যোগসূত্র হতে পারেনম যখন তারা তাঁর সাথে যুক্ত হতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, একটা ল্যাপটপ শুধু ব্যাটারিতে চার্জ থকা অবস্থায় কাজ করতে পারে। কিন্তু যদি তা কোনো বিদ্যুতের উৎসের সাথে সংযুক্ত থাকে, তবে তা ঐ উৎসের জীবনকাল পর্যন্ত কাজ করতে পারে। অর্থাৎ, আমি যদি আমাকে উজাড় করে দিতে থাকি, আমি অবসন্ন হয়ে যাব, কিন্তু আমি যদি অনন্ত যোগানদাতা উৎসের সাথে সংযুক্ত থাকি, তবে আমি অবসন্ন হব না, কেননা আমি শুধু সেই উৎস থেকে সম্পদ হস্তান্তর করছি মাত্র। বৈদিক শাস্ত্র শ্রীকৃষ্ণকে সমস্ত শক্তির একমাত্র অশেষ আধার হিসেবে মূল্যায়ন করে।
শরীর-ইন্দ্রিয়ভিত্তিক ভ্রম-এর গন্ডী পেরিয়ে পরস্পরকে শ্রীকৃষ্ণের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে সহযোগিতা করার মাধ্যমে সম্পর্ক তৈরি করা যার উদ্দেশ্য; এই হলো নিঃশর্ত ভালোবাসার প্রকৃত অর্থ। নিঃশর্ত বিস্ময়কর এ জগতে সবকিছুই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, সব শর্তই হেঁয়ালি সর্বস্ব হয়, তাই শর্ত সাপেক্ষ পৃথিবীতে নিঃশর্ত ভালোবাসার প্রশ্নই কোথায়?
আপনার খুব কাছের একজনের কথা ভাবুন। তার কোন বিষয়ে আপনি আকর্ষিত? অবশ্যই শুধু তার শরীর নয়। তার শরীর থেকে আত্মাটি বের হয়ে গেলে একটি নিঃস্পন্দ শরীর পরে থাকবে মাত্র। কেউ নিশ্চই একটি মৃত দেহের শাথে সম্পর্ক স্থাপন করবে না? আপনি যাতে আকৃষ্ট তা হলো ঐ ব্যক্তির চেতনা, যাকে শ্রীকৃষ্ণ আত্মার শক্তি বলেছেন।প্রকৃত ভালোবাসা আত্মিক হয়ে থাকে।
অনেকেই soul mate শব্দটি ব্যবহার করে থাকে যেসব আপত-ভালোবাসার অনিত্য মানুষদের বোঝাতে। কথাটি আমাদের শরীরিক অস্তিত্বের অনেক গভীরে প্রবেশ করে। আত্মা আসলে কী? কেন আমাদের সম্পর্কগুলো দুঃখে পর্যবসিত হয়? কৃষ্ণ কে? আমরা যদি নিঃশর্ত ভালোবাসার স্বাদ আস্বাদনে উৎসাহী হই,তবে এই প্রশ্নগুলোর বিশদ ব্যাখ্যা প্রয়োজন। মানুষ সম্পর্ক-উন্নয়নের জন্য বই পড়ে, সভা-সেমিনারে যায়; কারণ,তারা মানুষের মূল্য বোঝে, তাই তাদের সাথে সম্পর্ক-উন্নয়নের সম্বন্ধে জেনেছেন, তারা শ্রীকৃষ্ণকে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ নিয়ন্তা মনে কারেন। শুধা তিনিই দেখাতে পারেন, কী করে আমরা পরস্পরের সাথে চিন্ময় সম্পর্কে সম্পর্কিত হতে পারি।
শ্রীকৃষ্ণ নিজে এ বিষয়গুেলো ব্যাখ্যা করেছেন ভগবতগীতায় (যাকে চিন্ময় সম্পর্ক স্থাপনের মূল যোগ্যতা বিবেচনা করা হয়) শ্রীমদ্ভাগবতমে (স্নাতকোত্তর যোগ্যতা) এবং চৈতন্যচরিতামৃতে (জড়জগতের সীমার বাইরে প্রেমের সম্পর্কে পিএইচডি সমমান)। আমরা দিকপাল সব পন্ডিত বা শিক্ষকদের একমাত্র গতি শ্রীকৃষ্ণকে কেন আমাদের অন্তরে তাঁকে ব্যাখ্যা করার সুযোগটাও দিই না? অতীত ও বর্তমানের যোগগুরু এই যোগ্যতার চূঁড়ায় আরোহণ করেছেন, তবে তা সম্ভব হয় সকল ভালোবাসার একমাত্র লক্ষ্যবস্তু শ্রীকৃষ্ণ ঠিক যে প্রেম-ভক্তিরপথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন সেই পথে।- হরেকৃষ্ণ,,,,,
এই মন্তব্যটি একটি ব্লগ প্রশাসক দ্বারা মুছে ফেলা হয়েছে।