সুখ অর্থে নয় সন্তুষ্টিতে-Real happiness-প্রকৃত সুখ
সুখ অর্থে নয় সন্তুষ্টিতে-প্রকৃত সুখ লাভের উপায়
একসময় কোনো এক রাজ্যের রাজা তার মন্ত্রীর সাথে হাঁটছিলেন। হাঁটতে হাঁটতে একটি খামার দেখলেন। সেখানে একজন কৃষকের সাথে তার স্ত্রীসহ ছেলেও উপস্থিত ছিল। তারা নিজেদের মধ্যে মনের সুখে মৃদুস্বরে বার্তালাপ করছিল। তাদের মুখমন্ডল প্রদীপ্তমান ছিল। তাদের দেখে সুখী এবং উৎফুল্লিত দেখাচ্ছিল। তারা মনের আনন্দে গান গাচ্ছিল। তারা এক অপরের সাথে স্নেহময়ী ভালোবাসার আদান প্রদান করছিল।
তাদের সুখী দেখে রাজা বললেন, মন্ত্রী মহাশয় “আমার গগণচুম্বী অট্রালিকা রয়েছে এবং সমস্তকিছু থাকা সত্ত্বেও আমি এরূপ সুখের স্বপ্ন দেখছি মাত্র, আর এরা তো আমার থেকেও সুখী। কেন?” মন্ত্রী বললেন, “মহারাজ, এই পরিবারের লোকেরা ৯৯ ক্লাবের সদস্য নয়।” রাজা বললেন, “৯৯ ক্লাবটি আবার কী?” মন্ত্রী বললেন, “রাজা মশাই, আমাকে ৯৯টি স্বর্ণমুদ্রা দিন, আমি বলছি।” রাজা মন্ত্রীর কথা মতো তাকে ৯৯টি স্বর্ণমুদ্রা দিলেন এবং মন্ত্রী বললেন, “আপনার প্রশ্নের উত্তর আজ নয় ছয় মাস পরে বলব।”
তাদের সুখী দেখে রাজা বললেন, মন্ত্রী মহাশয় “আমার গগণচুম্বী অট্রালিকা রয়েছে এবং সমস্তকিছু থাকা সত্ত্বেও আমি এরূপ সুখের স্বপ্ন দেখছি মাত্র, আর এরা তো আমার থেকেও সুখী। কেন?” মন্ত্রী বললেন, “মহারাজ, এই পরিবারের লোকেরা ৯৯ ক্লাবের সদস্য নয়।” রাজা বললেন, “৯৯ ক্লাবটি আবার কী?” মন্ত্রী বললেন, “রাজা মশাই, আমাকে ৯৯টি স্বর্ণমুদ্রা দিন, আমি বলছি।” রাজা মন্ত্রীর কথা মতো তাকে ৯৯টি স্বর্ণমুদ্রা দিলেন এবং মন্ত্রী বললেন, “আপনার প্রশ্নের উত্তর আজ নয় ছয় মাস পরে বলব।”
মন্ত্রী মুদ্রাগুলো নিলেন এবং সেই কৃষকের ঘরের ঠিক দরজার সামনে মুদ্রাগুলো রাখলেন। সকালে কৃষক যখন ঘুম থেকে উঠল, সে দরজার সামনে একটি থলে দেখতে পেল। সে থলেটি তুলল এবং উৎসাহের সাথে এটি তার ঘরে নিয়ে গেল। উৎকন্ঠার সাথে থলেটি খুলল। ও! স্বর্ণমুদ্রা! স্বর্ণমুদ্রা! সে এরূপ সৌভাগ্যের মালিক কখনোই হয়নি। সে খুশিতে যেন আত্মহারা হলো।
সে মেঝেতে মুদ্রাগুলো ছড়িয়ে দিল এবং গুণতে শুরু করল। ৯৯টি মুদ্রা। “আমি খুব উত্তেজিত থাকায় গুণতে ভুল করেছি। আমাকে আবার গুণতে হবে।” একই হলো-৯৯টি। সে বলল,“ এ কেমন গর্দভ যে, আরেকটি বেশি গুণতে ভুল করে, গুণতে হলে তো একটি রাউন্ড ফিগার হিসাব করা উচিত, কেন ৯৯টি হচ্ছে? ১০০টি কেন নয়?” তাই সে তার স্ত্রীকে ডাকল, “তুমি হিসাব করো তো,” সেও গুললো ৯৯টি।
“তোমাকে দিয়ে হবে না” সে তার ছেলেকে ডাকল, “তুমি হিসাব করো!” প্রত্যেকেই গুণে দেখল ৯৯টি। সে বলল, “ভগবান, এটি নিয়ে আমরা সুখী নই, এটাকে আমাদের ১০০টি বানাতেই হবে।” তাই সে আরেকটি মুদ্রার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে শুরু করল এবং একটি মুদ্রা পেতে যদি বছর-মাস কেটে যায়, তারপরও সে এটি করতে রাজি আছে। অপরদিকে তার স্ত্রী চিন্তা করল, “আমার স্বামী এত বোকা! আমাদের ৯৯টি স্বর্ণমুদ্রা রয়েছে; আর তিনি এর থেকে একটিও খরচ করছে না!”
তাই সে দুটি স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে বাজারে গেল। প্রত্যেক সন্ধায় লোকটি ঘরে ফিরে এবং সেই স্বর্ণমুদ্রাগুলো হিসাব করে। ঠিক সেদিন সন্ধায়ও সে এলো এবং সেগুলো হিসাব করল। মাত্র ৯৭টি, প্রথমে একটি কম ছিলো এখন আরো দুটি কম। তাই সে চিৎকার করে বলল, “দুটো স্বর্ণমুদ্রা কোথায় গেল?” স্ত্রী বললো, “ভালো, আমি তোমার মতো এত বোকা নই, আমি ভেবেছিলাম আমি কিছু কেনাকাটা করতে বাজারে যাব। আমি দুটি স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে খরচ করেছি।” কৃষকটি চিৎকার করে বলল, “আমি খুব
কঠোর পরিশ্রম করছি, আমার রক্ত ও ঘাম ঝড়াচ্ছি একটি মুদ্রা পাওয়ার জন্য, আর তুমি বোকা বাজারে গিয়ে তা খরচ করে আসছো?” ঐ একই সময়ে ছেলেও আরো দুটি মুদ্রা খরচ করে এসেছে, আর থাকল ৯৫টি। ছয় মাস অতিক্রান্ত হলো। রাজা এবং মন্ত্রী সেই পথে যাচ্ছিল। সেসময় তাদের মৃদস্বরে বার্তালাপ আর হচ্ছিল না, সাজানো জীবন ছিল না,সে মেঝেতে মুদ্রাগুলো ছড়িয়ে দিল এবং গুণতে শুরু করল। ৯৯টি মুদ্রা। “আমি খুব উত্তেজিত থাকায় গুণতে ভুল করেছি। আমাকে আবার গুণতে হবে।” একই হলো-৯৯টি। সে বলল,“ এ কেমন গর্দভ যে, আরেকটি বেশি গুণতে ভুল করে, গুণতে হলে তো একটি রাউন্ড ফিগার হিসাব করা উচিত, কেন ৯৯টি হচ্ছে? ১০০টি কেন নয়?” তাই সে তার স্ত্রীকে ডাকল, “তুমি হিসাব করো তো,” সেও গুললো ৯৯টি।
“তোমাকে দিয়ে হবে না” সে তার ছেলেকে ডাকল, “তুমি হিসাব করো!” প্রত্যেকেই গুণে দেখল ৯৯টি। সে বলল, “ভগবান, এটি নিয়ে আমরা সুখী নই, এটাকে আমাদের ১০০টি বানাতেই হবে।” তাই সে আরেকটি মুদ্রার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে শুরু করল এবং একটি মুদ্রা পেতে যদি বছর-মাস কেটে যায়, তারপরও সে এটি করতে রাজি আছে। অপরদিকে তার স্ত্রী চিন্তা করল, “আমার স্বামী এত বোকা! আমাদের ৯৯টি স্বর্ণমুদ্রা রয়েছে; আর তিনি এর থেকে একটিও খরচ করছে না!”
তাই সে দুটি স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে বাজারে গেল। প্রত্যেক সন্ধায় লোকটি ঘরে ফিরে এবং সেই স্বর্ণমুদ্রাগুলো হিসাব করে। ঠিক সেদিন সন্ধায়ও সে এলো এবং সেগুলো হিসাব করল। মাত্র ৯৭টি, প্রথমে একটি কম ছিলো এখন আরো দুটি কম। তাই সে চিৎকার করে বলল, “দুটো স্বর্ণমুদ্রা কোথায় গেল?” স্ত্রী বললো, “ভালো, আমি তোমার মতো এত বোকা নই, আমি ভেবেছিলাম আমি কিছু কেনাকাটা করতে বাজারে যাব। আমি দুটি স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে খরচ করেছি।” কৃষকটি চিৎকার করে বলল, “আমি খুব
“আমরা সর্বদাই অর্থের পেছনে ছুটে বেড়াই আরো অধিক অর্জনের জন্য, কিন্তু আমরা কেউ জানি না, কবে মিটবে এই অন্তহীন চাহিদা। তবে কি আমরা উন্নতির জন্য প্রয়াস করবো না? হ্যা, আমরা অবশ্যই প্রয়াস করবো। কিন্তু সেই কর্ম প্রয়াসের দ্বারা আমারা যা পাবো তাতেই আমরা সন্তুষ্ট থাকবো। নতুবা, কাঙ্ক্ষিত সুখ লাভ করতে গিয়ে, যতটুকাু সুখ আমাদের আছে তাও আমরা উপভোগ করতে পারবো না।”
গান গাইতো না, ভালোবাসা ছিল না; শুধু তর্ক, মারামারি, ঝগড়া হচ্ছিলো। তাই রাজা বললেন, “কী ঘটল? মাত্র ছয় মাসে তারা এত বদলে গেল কী করে?” মন্ত্রী বললেন, “এখন তারা পকৃতই ৯৯ ক্লাবের সদস্য।” রাজা বললেন, “আরে তুমি ৯৯টি স্বর্ণমুদ্রা নিলে, ৯৯ক্লাব কী তা বললে না তো?” মন্ত্রী বললেন, “৯৯ ক্লাব হচ্ছে তাদের ক্লাব, যাদের ৯৯টি স্বর্ণমুদ্রা রয়েছে, কিন্তু একটি মুদ্রা চলে যাওয়ার পরেও যারা তাদের সেই মুদ্রা খরচ করে না।”
১০০টি মুদ্রা পূর্ণ করতে, একটি মুদ্রার পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে, আমারা কি ৯৯টি মুদ্রার উপযোগ করতে ভুলে যাব? আমাদের চাহিদা অন্তহীন। অথচ, এই গল্পে আমরা দেখতে পেলাম একটি মুদ্রার জন্য ৯৯টি মুদ্রা পেয়েও সে সন্তুষ্ট হতে পারছে না। কারণ, তার যা আছে সে তাতে সন্তুষ্ট নয়। আমরা সর্বদাই অর্থের পেছনে ছুটে বেড়াই আরো অধিক অর্জনের জন্য, কিন্তু আমরা কেউ জানি না, কবে মিটবে এই অন্তহীন চাহিদা। এখন কেউ বলতে পারে, তবে কি আমরা উন্নতির জন্য প্রয়াস করবো না? হ্যা, আমরা অবশ্যই প্রয়াস করবো। কিন্তু সেই কর্মপ্রয়াসের দ্বারা আমরা যা পাবো তাতেই আমরা সন্তুষ্ট থাকবো। যদি আমরা এই গল্পের ব্যক্তির মতো হই, তবে কাঙ্ক্ষিত সুখ লাভ করতে গিয়ে, যতটুকা সুখ আমাদের আছে তাও আমরা উপভোগ করতে পারবো না। সুতরাং, সুখ অর্থে নয় সন্তুষ্টিতে।-হরেকৃষ্ণ
১০০টি মুদ্রা পূর্ণ করতে, একটি মুদ্রার পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে, আমারা কি ৯৯টি মুদ্রার উপযোগ করতে ভুলে যাব? আমাদের চাহিদা অন্তহীন। অথচ, এই গল্পে আমরা দেখতে পেলাম একটি মুদ্রার জন্য ৯৯টি মুদ্রা পেয়েও সে সন্তুষ্ট হতে পারছে না। কারণ, তার যা আছে সে তাতে সন্তুষ্ট নয়। আমরা সর্বদাই অর্থের পেছনে ছুটে বেড়াই আরো অধিক অর্জনের জন্য, কিন্তু আমরা কেউ জানি না, কবে মিটবে এই অন্তহীন চাহিদা। এখন কেউ বলতে পারে, তবে কি আমরা উন্নতির জন্য প্রয়াস করবো না? হ্যা, আমরা অবশ্যই প্রয়াস করবো। কিন্তু সেই কর্মপ্রয়াসের দ্বারা আমরা যা পাবো তাতেই আমরা সন্তুষ্ট থাকবো। যদি আমরা এই গল্পের ব্যক্তির মতো হই, তবে কাঙ্ক্ষিত সুখ লাভ করতে গিয়ে, যতটুকা সুখ আমাদের আছে তাও আমরা উপভোগ করতে পারবো না। সুতরাং, সুখ অর্থে নয় সন্তুষ্টিতে।-হরেকৃষ্ণ