কলিযুগের কথা-১

 
Krishna,Boloram

কলিযুগ সকল উৎপাতের কারণ। 

কলৌ ন রাজন্ জগতাং পরং গুরুং ত্রিলোকনাখানতপাদপঙ্কজং। 
প্রয়েণ মত্যা ভগবন্তমচ্যুতং যক্ষ্যন্তি পাষন্ডবিভিন্নচেতসঃ।।
-হে মহারাজ, কলিযুগে মানুষের বুদ্ধি নাস্তিক্যবাদের দ্বারা বিপদগামী হবে এবং তারা প্রায় কখনও জগদগুরু পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশে কোনো যজ্ঞ নিবেদন করবে না। 
 
যদিও ত্রিলোকের নিয়ন্তা মহান দেবতাগণও সকেলেই পরমেশ্বর ভগবানের চরণে প্রণত হয়, তবু এই যুগের তুচ্ছ ও আর্ত মত্যবাসীগণ তা করবে না। (শ্রীমদ্ভাগবত ১২.৩.৪৩) শ্রীমদ্ভাগকতের এই গভীর অর্থপূর্ণ বচনটি পাঠ করে আমাদের সমস্ত দুঃখের কারণ আমরা বুঝতে পারি। 
 
সম্প্রদায়-দীক্ষা লাভ করে অর্চনমার্গে প্রবেশ করেও প্রেমলাভ করি না। নানা শাস্ত্র অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা করেও আমাদের বিশুদ্ধ কৃষ্ণমতি জন্মে না। অনেক ব্রতাদি আচরণ করেও আমরা নির্মল ভক্তি লাভ করি না। গোস্বামীকুলে জন্মগ্রহণ করেও আমরা সরল গৌরভক্তি অর্জন করতে পারি না। 
 
অভ্যাসগত বৈষ্ণবের নিকট ভেকধারণ করেও আমরা কেবল সংসার উপাসনা করতে থাকি। কলিই আমাদের সকল উৎপাতের একমাত্র কারণ হয়ে আমাদের বঞ্চনা করে। 

শ্রীকৃষ্ণ সমস্ত উপাস্য দেবতার উপাস্য এবং জগতের পরম গুরু। কৃষ্ণোপাসনা সকল জীবের সর্বকালীন কর্তব্য হলেও জীব কলিকালে পাষন্ডমতে ও পাষন্ডপ্রবৃত্তি দ্বারা পরিচালিত হয়ে তাকে প্রায় ভুলে থাকে এবং তার প্রতি অকৃত্রিম ভক্তিধর্ম আচরণ করে না। 
 
যন্নামধেয়ং ম্রিয়মাণ আতুরঃ পতন্ স্খলন্ বা বিবশো গৃণন্ পুমান্। বিমুক্তকর্মার্গল উত্তমাং গতিং প্রপ্নোতি যক্ষ্যন্তি ন তং কলৌ জনাঃ।। -মৃত্যুপথযাত্রী সন্ত্রস্ত ব্যক্তি তার শয্যায় পতিত হয়। 
 
যদিও তার কণ্ঠ স্খলিত হয় এবং সে যা বলে, সে সম্পর্কে প্রায় অচেতন, তবুও সে যদি পরমেশ্বর ভগবানের পবিত্র নাম উচ্চারণ করে, তাহলে তার সকাম কর্মের বন্ধন থেকে মুক্ত হতে পারবে এবং পরমলক্ষ্যে পৌছাতে পারবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কলিযুগের মানুষ পরমেশ্বর ভগবানের আরাধনা করবে না।---(শ্রীমদ্ভাগবত ১২.৩.৪৪)

আরও পড়ুন

 
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url