বিষপান করে শিবের ব্রহ্মান্ড রক্ষা-শ্রীমদ্ভাগবত

 
বিষপান করে শিবের ব্রহ্মান্ড রক্ষা

বিষপান করে শিবের ব্রহ্মান্ড রক্ষা



শ্রীল শুকদেব গোস্বামী বললেন-"হে কুরুশ্রেষ্ঠ মহারাজ পরীক্ষিৎ! দেবতা এবং দানবেরা নাগরাজ বাসুকিকে নিমন্ত্রণ করে অমৃতের অংশ প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে, তাকে রজ্জুরূপে মন্দর পর্বতে বেষ্টন করে, মহা আনন্দে যত্ন সহকারে অমৃত উৎপাদনের জন্য ক্ষীরসাগর মন্থন করতে আরম্ভ করলেন।


ভগবান অজিত প্রথমে বাসুকির সম্মুখভাগ গ্রহণ করেছিলেন, এবং তারপর দেবতারা তাঁকে অনুসরণ করেছিলেন। দৈত্য অধিপতিরা বিবেচনা করেছিল, সর্পের পুচ্ছভাগ গ্রহণ করা অমঙ্গলজনক। 

 

তাই তারা ভগবান এবং দেবতাদের দ্বারা গৃহীত সর্পের অগ্রভাগ মঙ্গলজনক এবং মহিমান্বিত বলে মনে করে তা গ্রহণ করতে চেয়েছিল। 

 

এইভাবে অসুরেরা, নিজেদের বৈদিক জ্ঞানে অত্যন্ত উন্নত এবং জন্ম ও কর্মের দ্বারা বিখ্যাত বলে মনে করে প্রতিবাদ করেছিল যে, তারা সর্পের অগ্রভাগ ধারণ করবে। দেবতাদের আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করে দৈত্যেরা তখন মৌনভাব অবলম্বন করেছিল। 

 

দৈত্যদের অভিপ্রায় বুঝতে পেরে, ভগবান ঈষৎ হেসে সর্পের সম্মুখভাগ পরিত্যাগ করে দেবতাগণ সহ বাসুকির পুচ্ছদেশ গ্রহণ করেছিলেন।  

 

কে সর্পের কোন্ অংশ ধারণ করবে তার স্থান বিভাগ করে কশ্যপের পুত্র দেবতা এবং দানবেরা মহা উদ্যম সহকারে অমৃত লাভের জন্য সমুদ্র মন্থন করতে লাগলেন।"


"হে পাণ্ডুনন্দন, মন্দর পর্বতকে মন্থনদণ্ড করে যখন এইভাবে ক্ষীরসমুদ্র মন্থর করা হচ্ছিল, তখন তার কোন আধার ছিল না এবং তাই বলিষ্ঠ দেবতা এবং দানবগণ কর্তৃক ধৃত হওয়া সত্ত্বেও, অত্যন্ত ভারী হওয়ার ফলে তা সাগরের জলে নিমজ্জিত হয়েছিল। 

 

দৈব বলে পর্বত নিমজ্জিত হওয়ায়, দেবতা এবং দানবেরা অত্যন্ত বিষণ্ণ হয়েছিলেন এবং তাঁদের মুখশ্রী ম্লান হয়েছিল। বিধিসৃষ্ট সেই পরিস্থিতি দর্শন করে, সেই অপার শক্তিশালী, সত্যসঙ্কল্প ভগবান কূর্মরূপ ধারণ করে জলে প্রবেশ করেছিলেন এবং সেই বিশাল মন্দর পর্বতকে উত্তোলন করেছিলেন। 

 

দেবতা এবং দানবেরা মন্দর পর্বতকে উত্থিত দেখে পুনরায় মন্থন করতে উদ্যত হয়েছিলেন। ভগবান এক লক্ষ যোজন বিস্তৃত একটি বিশাল দ্বীপের মতো তাঁর পৃষ্ঠে সেই পর্বত ধারণ করেছিলেন।"


“হে রাজন, যখন দেবতা এবং দানবেরা তাঁদের বাহুবলের দ্বারা সেই অদ্ভুত কুর্মের পৃষ্ঠে ধৃত মন্দর পর্বতকে ঘূর্ণিত করছিলেন, তখন সেই কুর্ম সেই পর্বতের আবর্তনকে তাঁর অঙ্গ-কণ্ডয়নের মতো সুখকর বলে মনে করেছিলেন। 

 

তারপর ভগবান শ্রীবিষ্ণু তাঁদের অনুপ্রাণিত করার জন্য এবং বলবীর্য বৃদ্ধি করার জন্য অসুরদের মধ্যে রজোগুণরূপে, দেবতাদের মধ্যে সত্ত্বগুণরূপে এবং বাসুকিতে তমোগুণরূপে প্রবিষ্ট হয়েছিলেন। হাজার হাজার বাহু সমন্বিত হয়ে, ভগবান তখন মন্দর পর্বতের উপর আর একটি বিশাল পর্বতের মতো প্রকাশিত হলেন এবং এক হস্তের দ্বারা মন্দর পর্বত ধারণ করেছিলেন। 

 

স্বর্গলোকে ইন্দ্রাদি দেবতাগণ সহ ব্রহ্মা এবং শিব ভগবানকে প্রার্থনা নিবেদন করেছিলেন এবং তাঁরা তাঁর উপর পুষ্প বর্ষণ করেছিলেন। পর্বতের উপরিভাগে ও অধঃদেশে বিরাজমান এবং দেবতা, দৈত্য, বাসুকি ও পর্বতের মধ্যেও প্রবিষ্ট ভগবানের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, দেবতা ও দানবেরা অমৃতের জন্য উন্মত্তের মতো কার্য করতে লাগলেন। 

 

দেবতা এবং অসুরদের বলের দ্বারা ক্ষীরসমুদ্র এতই ক্ষোভিত হয়েছিল যে, জলের সমস্ত কুমিরেরা তখন অত্যন্ত ব্যাকুল হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও সমুদ্রের মন্থনকার্য এইভাবে চলতে লাগল। বাসুকির সহস্র নেত্র এবং মুখ ছিল। 

 

সেই মুখ থেকে তার নিঃশ্বাসের সঙ্গে ধূম এবং অগ্নি নির্গত হচ্ছিল, যা পৌলোম, কালেয়, বলি, ইম্বল আদি অসুরদের প্রভাবিত করেছিল। তারা তখন দাবানল-দগ্ধ সরল বৃক্ষের মতো নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল। দেবতারাও বাসুকির অগ্নিশিখাময় নিঃশ্বাসের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন- তাঁদের দেহের প্রভা মলিন হয়েছিল এবং তাঁদের বস্তু, মালা, অস্ত্র এবং মুখ ধুমের দ্বারা কালিমায় আচ্ছন্ন হয়েছিল। 

 

কিন্তু ভগবানের কৃপায় দেবতাদের স্বস্তি প্রদানের জন্য সমুদ্রের উপরে মেঘ আবির্ভূত হয়ে মুষলধারায় বারি বর্ষণ করতে থাকে এবং সমুদ্র-তরঙ্গের জলকণা বহন করে মৃদুমন্দ বায়ু প্রবাহিত হতে থাকে। শ্রেষ্ঠ দেবতা এবং অসুরদের দ্বারা এত প্রয়াস সত্ত্বেও যখন ক্ষীরসমুদ্র থেকে অমৃত উৎপন্ন হল না, তখন ভগবান অজিত স্বয়ং সমুদ্র মন্থন করতে শুরু করলেন। 

 

মেঘের মতো শ্যামবর্ণ, পীতবাস, কর্ণে বিদ্যুতের মতো উজ্জ্বল কর্ণকুণ্ডল, আলুলায়িত কেশ, বনমালী এবং কমলনয়ন ভগবান জগতের অভয়প্রদ বাহুসমূহের দ্বারা বাসুকিকে গ্রহণপূর্বক মন্দর পর্বত ধারণ করে মন্থন করতে  শুরু করেছিলেন। 

 

তখন তিনি ইন্দ্রনীল পর্বতের মতো ত শোভা পাচ্ছিলেন। মৎস্য, মকর, কচ্ছপ, সর্পগণ অত্যন্ত  সন্তপ্ত হয়েছিল এবং তিমি, জলহস্তী, কুমির ও তিমিঙ্গিল ২ (বিশাল তিমি যা ছোট তিমিদের গিলে খায়) অত্যন্ত ব ব্যাকুল হয়ে জলের উপরিভাগে ভেসে উঠেছিল। 

 

যখন ব এইভাবে সমুদ্র মথিত হচ্ছিল, তখন প্রথমে অতি ভীষণ ন হালহল নামক বিষ উত্থিত হয়েছিল।"


"হে রাজন, সেই দুর্দমনীয় বিষ যখন মহাবেগে উপরে  এবং নিচে সর্বদিকে ছড়িয়ে পড়তে লাগল, তখন সমস্ত  দেবতারা নিরাশ্রয় এবং অত্যন্ত ভয়ভীত হয়ে ভগবানকে ও সঙ্গে নিয়ে সদাশিবের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। 

 

দেবতারা ও শিবকে তাঁর পত্নী ভবানী সহ কৈলাস পর্বতের শিখরে , ত্রিভুবনের সমৃদ্ধির জন্য তপস্যারত দর্শন করেছিলেন।  মহান ঋষিরা মুক্তি লাভের বাসনায় তাঁর আরাধনা  করছিলেন। দেবতারা তাঁকে তাঁদের প্রণতি নিবেদন ও করেছিলেন এবং গভীর শ্রদ্ধা সহকারে তাঁর বন্দনা চা করেছিলেন।"


প্রজাপতিগণ বললেন-"হে দেবাদিদেব মহাদেব, কি আপনি সমস্ত জীবের পরমাত্মা এবং তাদের সুখ ও সমৃদ্ধির কারণ। আমরা আপনার শরণাগত হয়েছি। 

 

সমগ্র ত্রিভুবন জুড়ে বিস্তৃত হচ্ছে এই যে ভয়ঙ্কর বিষ, তা তা থেকে আপনি দয়া করে আমাদের রক্ষা করুন। হে নর ভগবান, আপনি সমগ্র জগতের বন্ধন এবং মুক্তির কারণ, কেন না আপনি তার ঈশ্বর।

 

 যাঁরা আধ্যাত্মিক চেতনায়, উন্নত, তাঁরা আপনার শরণাগত হয় এবং তাই আপনি  তাঁদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করেন এবং আপনি তাঁদের  মুক্তিরও কারণ। 

 

আমরা তাই আপনার অর্চনা করি। হে নয় বিভো, আপনি স্বপ্রকাশ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ। আপনি আপনার স্বশক্তির দ্বারা এই জড় জগৎ সৃষ্টি করেন এবং ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর নাম ধারণ করে সৃষ্টি, পালন এবং সংহার- কার্য সম্পাদন করেন। 

 

আপনি সর্ব-কারণের কারণ,  স্বপ্রকাশ, অচিন্ত্য, নির্বিশেষ ব্রহ্ম, যা মূলত পরব্রহ্ম। এই জড় জগতে আপনি বিবিধ শক্তি প্রকাশ করেন।"

 

তা “হে ভগবান, আপনি বেদের মূল উৎস। আপনি  জড় সৃষ্টির মূল কারণ, প্রাণ, ইন্দ্রিয়, পঞ্চমহাভূত, ত্রিগুণ  এবং মহত্তত্ত্ব। আপনি কাল, সঙ্কল্প এবং সত্য ও ঋত  নামক দুই প্রকার ধর্ম। আপনি 'অ-উ-ম', এই তিন অক্ষর সমন্বিত 'ওঁ' এর আশ্রয়। 

 

হে সর্ব-লোকপিতা, পণ্ডিতেরা জানেন যে অগ্নি আপনার মুখ, পৃথিবী আপনার পাদপদ্ম, কাল আপনার গতি, দিকসমূহ আপনার কর্ণ এবং জলের অধিষ্ঠাতা বরুণ আপনার জিহ্বা। হে ভগবান, আকাশ আপনার নাভি, বায়ু আপনার নিঃশ্বাস, সূর্য আপনার চক্ষু, জল আপনার রেত এবং আপনি উচ্চ ও নিচ সমস্ত জীবের আশ্রয়। 

 

চন্দ্র আপনার মন এবং স্বর্গ আপনার মস্তক। হে ভগবান, আপনি সাক্ষাৎ বেদত্রয়। সপ্তসমুদ্র আপনার উদর, পর্বতসমূহ আপনার অস্থি, সর্বপ্রকার ওষধি ও লতা আপনার গায়ের রোম, গায়ত্রী আদি মন্ত্র আপনার সপ্তধাতু এবং বৈদিক ধর্ম আপনার হৃদয়। 

 

হে ঈশ, পঞ্চ উপনিষদ আপনার পঞ্চমুখ, যা থেকে আটত্রিশটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রের বর্গ উৎপন্ন হয়েছে। হে দেব, স্বয়ং জ্যোতি, আপনি শিব নামে বিখ্যাত। আপনি সাক্ষাৎ পরমাত্মা-তত্ত্বে অবস্থিত। হে দেব, অধর্মের তরঙ্গে আপনার ছায়া বর্তমান, যার ফলে বিবিধ অধর্মের সৃষ্টি হয়।  

 

সত্ত্ব, রজ এবং তমোগুণ আপনার তিনটি নেত্র। ছন্দোময় বেদ আপনারই প্রকাশ, কারণ সমস্ত শাস্ত্রকারেরা আপনার কৃপাদৃষ্টি প্রাপ্ত হয়ে বিবিধ শাস্ত্র রচনা করেছেন। হে গিরীশ, ব্রহ্মজ্যোতি যেহেতু সত্ত্ব, রজ এবং তমোগুণের অতীত, তাই এই জড় জগতের লোকপালেরাও তা জানতে পারেন না বা উপলব্ধি করতে পারেন না। 

 

তা ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং দেবরাজ মহেন্দ্রেরও বোধগম্য নয়। প্রলয়ের সময় আপনার নেত্রাগ্নির স্ফুলিঙ্গের দ্বারা সমগ্র জগৎ ভস্মীভূত হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিভাবে যে তা হয় আপনি পর্যন্ত জানেন না। অতএব দক্ষযজ্ঞ, ত্রিপুরাসুর, কালকূট বিষ ইত্যাদি বিনাশের কথা কি আর বলার আছে? 

 

আপনার এই সমস্ত কার্যকলাপ আপনার স্তুতির বিষয়বস্তু হতে পারে না। সারা জগতের উপদেশ প্রদানকারী প্রচারক আত্মারাম মহাত্মারা নিরন্তর তাঁদের হৃদয়ে আপনার চরণ-কমলের চিন্তা করেন, কিন্তু যারা আপনার তপস্যার কথা জানে না, তারা আপনাকে উমা সহ বিচরণ করতে দেখে ভ্রান্তিবশত কামী, অথবা শ্মশানে ভ্রমণ করতে দেখে উগ্র ও হিংস্র বলে মনে করে। 

 

তারা অবশ্যই নির্লজ্জ। তারা আপনার লীলা বুঝতে পারে না। ব্রহ্মা আদি দেবতারাও আপনাকে জানতে পারেন না, কারণ আপনি স্থাবর এবং জঙ্গম সমস্ত সৃষ্টির অতীত। 

 

যেহেতু কেউই আপনাকে তত্ত্বত জানতে পারে না, অতএব আমরা কিভাবে আপনাকে প্রার্থনা নিবেদন করব? তা অসম্ভব। আমরা ব্রহ্মার সৃষ্ট জীব, অতএব আমাদের পক্ষে যথাযথভাবে আপনার বন্দনা করা সম্ভব নয়, তবুও আমরা যথাসাধ্য আমাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেছি। 

 

হে মহেশ্বর, আপনার প্রকৃত স্বরূপ আমাদের পক্ষে জানা অসম্ভব। আমরা কেবল দেখতে পাই যে, আপনার উপস্থিতি সকলের সুখ এবং সমৃদ্ধি আনয়ন করে। তার অতীত, আপনার কার্যকলাপ কিছুই বোঝা যায় না। আমরা কেবল এটুকুই দেখতে পাই, তার বেশি নয়।"


শ্রীল শুকদেব গোস্বামী বললেন-“সর্বজীবের হিতকারী মহেশ্বর সর্বত্র প্রসারণশীল সেই বিষের কারণে সমস্ত জীবদের অত্যন্ত পীড়িত দর্শন করে, অতীব দয়াপরবশ হয়ে তাঁর নিত্যসঙ্গিনী সতীকে এইভাবে বলেছিলেন।"


শিব বললেন-"হে ভবানী, দেখ ক্ষীরসমুদ্র মন্থনের ফলে উৎপন্ন কালকূট বিষ থেকে সমস্ত জীবদের কি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জীবন-সংগ্রামে রত সমস্ত জীবদের সুরক্ষা প্রদান করাই আমার কর্তব্য।

 

 অধীনস্থ আর্তজনদের রক্ষা করাই প্রভুর কর্তব্য। ভগবানের বহিরঙ্গা শক্তির দ্বারা মোহাচ্ছন্ন হয়ে জীবেরা পরস্পরের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন হয়। কিন্তু ভক্তেরা তাঁদের নশ্বর জীবন বিপন্ন করেও অন্যদের রক্ষা করার চেষ্টা করেন। 

 

হে সাধ্বী ভবানী, কেউ যখন পরোপকার করেন, তখন ভগবান শ্রীহরি অত্যন্ত প্রসন্ন হন এবং ভগবান যখন প্রসন্ন হন, তখন আমিও অন্যান্য সমস্ত প্রাণী সহ প্রসন্ন হই। তাই, আমি এই বিষ পান করব। আমার দ্বারা সকলের মঙ্গল সাধন হোক।"


শ্রীল শুকদেব গোস্বামী বললেন-"ভবানীকে এই কথা বলে বিশ্বভাবন ভগবান শিব সেই বিষ পান করতে প্রবৃত্ত হয়েছিলেন এবং মহাদেবের সামর্থ্য সম্বন্ধে পূর্ণরূপে অবগত ভবানী তা অনুমোদন করেছিলেন। 

 

তারপর, লোকহিতকারী মহাদেব কৃপাপূর্বক সেই হালহল নামক বিষ করতলে গ্রহণ করে পান করেছিলেন। ক্ষীরসমুদ্র থেকে উৎপন্ন কলঙ্ক-স্বরূপ সেই বিষ মহাদেবের কণ্ঠে একটি নীল রেখা উৎপন্ন করে তার শক্তি প্রকাশ করেছিল। 

 

সেই রেখাটিকে কিন্তু মহাদেবের ভূষণ বলে মনে করা হয়। বলা হয় যে, জীবের দুঃখ নিবারণের জন্য মহাপুরুষেরা সর্বদাই স্বেচ্ছায় দুঃখ বরণ করেন।


সকলের হৃদয়ে বিরাজমান ভগবানের আরাধনার এটিই সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা বলে বিবেচনা করা হয়। এই কার্যের কথা শ্রবণ করে, দক্ষকন্যা ভবানী, ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং সমস্ত প্রজাগণ দেবতাদেরও পূজ্য এবং জনগণকে বর প্রদাতা শিবের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। 

 

বিষ পান করার সময় শিবের হাত থেকে যে একটু বিষ পড়ে গিয়েছিল তা বৃশ্চিক, সর্প, বিষময় ওষধি এবং অন্য যে সমস্ত প্রাণীদের দংশন বিষময়, তারা পান করেছিল।”

 

আরও পড়ুন



* হিন্দু ধর্মে স্বর্গ ও নরক, নরক কত প্রকার ও কি কি?

* সৃষ্টির মূল কারণ ঈশ্বর নাকি প্রকৃতি 

* সমুদ্র মন্থনে দেবতা এবং অসুরদের সন্ধি 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url