মায়া কিভাবে আমাদের ক্ষতি করে
মায়া থেকে সাবধান
আমরা বর্ণাশ্রম অনুসরণ করার চেষ্টা করছি, তবে অন্তিমে আমাদের প্রত্যেককে একজন সত্যনিষ্ঠ ও শুদ্ধ ভক্ত হওয়া উচিত। তবে প্রচারের স্বার্থে, সংগঠিত হওয়ার স্বার্থে এবং অন্যান্য বহুবিধ কারণে আমরা বাহ্যিকরূপে বর্ণাশ্রম জীবনধারা অনুসরণ করি।
আমাদের লক্ষ্য হলো সর্বদাই ভগবদ্ভক্তিমূলক সেবা করা। আমাদের চারদিকে সামাজিক অবকাঠামোটি নিছকই এমন একটি সহায়তা যা আমাদের ভগবদ্ভক্তিমূলক সেবা করার অনুশীলনকে সহজ করে দেয়।
সুতরাং কেউ যেকোনো আশ্রমকেই উপযুক্ত বলে মনে করে এবং তা যদি তাকে সর্বোত্তম স্তরে ভগবদ্ভক্তিমূলক সেবা সম্পাদন করতে সক্ষম করে, তাহলে তাকে সেটি গ্রহণ করা উচিত। এভাবে ভগবদ্ভক্তিমূলক সেবায় নিযুক্ত থাকা অবস্থায়, এর অধীনে থেকে দৃঢ়সংকল্প আশ্রয়টি আমাদের সমস্ত ক্রিয়াকলাপের এক এবং অদ্বিতীয় উপাদান হওয়া উচিত।
যখনই মায়া আমাদেরকে ভগবদ্ভক্তিমূলক সেবা সম্পাদন করা পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে আমাদের মনে কিছু চিন্তা উপৎপাদনের চেষ্টা করে বা আমাদের সেবার পরিমাণ হ্রাস করতে চেষ্টা করে, তখনই আমাদের মাথার মধ্যে থেকে সমস্ত ধরনের বিপদ সতকর্তা গুলির ভিতরে প্রবেশ করা উচিত।
উদাহরণস্বরূপ, আমরা কাগজে পানামানিয়ান অভ্যুত্থানের উদ্যোগ সম্পর্কে অনুচ্ছেদগুলি দেখতে পাই। সংবাদপত্র আমাদের সতর্কতা দিচ্ছে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের সতর্কতা বা আসন্ন বিপদের সতর্কতা রয়েছে যা লোকেরা পেয়ে থাকে।
ডেল্টায় বসবাসকারীদের জন্য বন্যায় সতর্কতা, সাধারণ মানুষের জন্য আবহাওয়া সতর্কতা, যেমনটি আমরা শুনেছি যে পারমাণবিক জরুরি অবস্থার জন্য বিভিন্ন স্তরের সতকর্তা রয়েছে।
আর লাল সতর্কতা জারির পঞ্চম স্তরটি হলো সর্বশেষ পিপ.....পিপ...পিপ...তারপর পিইইপ! তারপর সব শেষ।
আমাদের নিজেকে বিপদ ঘণ্টা শুনতে প্রশিক্ষিত হওয়া উচিত। যখনই মায়া কিছু স্ব-নাশকতা চিন্তাভাবনা নিয়ে এগিয়ে আসে, আমরা আমাদের গুরু, কৃষ্ণ ও অন্যান্য ভক্তের প্রতি ঈর্ষাপরায়ন হতে শুরু করি।
পরবর্তীতে, আমরা এই সম্পর্কে ধারণা পেতে শুরু করি যে, কীভাবে আমাদের ভগবত ভক্তিমূলক সেবার পরিমাণ হ্রাস করা যায় অথবা একসাথে সমস্ত কিছু বন।ধ করে দেওয়া যায়।
আর যখন তা ঘটে, তখন আমাদের মধ্যে সমস্ত ধরনের সতর্কতাগুলি বন্ধ হওয়া উচিত। অন্য কোনো বৈষ্ণব আমাদের সতর্ক করতে পারেন।, “এটি মায়ার নকশা। লক্ষ্য করা ভাল।” তখন আমাদের চিন্তা করা উচিত, “এই ভক্তটি হচ্ছেন আমার প্রকৃত বন্ধু। তিনি আমাকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা সংকেত দিয়ে আমাকে সহায়তা করছেন।”
শ্রীল প্রভুপাদ বলেছিলেন যে, আমাদের শরীর দুর্বল অথবা অসুস্থ হলে আমরা অবশ্যেই আমাদের স্বাস্থ্য ফিরে পাই। সুস্বাস্থ বজায় রাখা আমাদের অপ্রাধিকার। আমাদের জপের সংখ্যা পুরণ করা এবং সেবা করা উচিত
আমরা যদি ভালোভাবে জপ না করি, ভালো সেবা করতে পারব না। আমরা যদি অসুস্থ হই, জপ করা কঠিন। ভালোভাবে জপ করতে হলে আমাদের সুস্থ থাকা প্রয়োজন। আমরা যদি প্রচুর পরিমাণে ভক্তিমূলক সেবা সম্পাদন করতে চাই তাহলে আমাদের মনোযোগ সহকারে জপ করা প্রয়োজন।
আমরা যদি দায়সারা জপ করি অথবা আদৌ জপ না করি, তাহলে আমরা সেবা করার জন্য অনুপ্রাণিত হবো না। তবুও আমরা যখন অনুপ্রাণিত না হয়েই কিছু সেবা করতে চেষ্টা করি, তখন আমরা অনেক ক্রুটি করে ফেলি। এই প্রকারের অনুপ্রেরণাহীন অবস্থায় মন কখনোই উন্নত কিছু নিদর্শন রাখতে পারে না।
ঘটনাচক্রে, আমরা আমাদের সেবার রুচি হারাবো এবং মায়ার প্রতি সংবেদনশীল হয়ে উঠব। তাই আমরা অবশ্যই খুব সুন্দর করে আমাদের জপ সম্পূর্ণ করব। তাহলে আমরা সুন্দর করে ভগবানের সেবা করতে পারব।
---শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী
আরও পড়ুনঃ
* শ্রীমদ্ভাগবত বক্তা- শুকদেব গোস্বামীর আবির্ভাব
* মহাভারতের মহারাজ পরীক্ষিতের জন্ম কথা
* কিভাবে পরীক্ষিৎ মহারাজ কলিযুগের সম্মুখীন হয়েছিলেন
* পৃথিবীতে কলি যুগের শুরুর সময়-কলির দন্ড ও পুরুষ্কার
* আমাদের হৃদয়ে ভগবান কোথায় থাকেন?
* শুদ্ধ ভক্তি কি? কোন দেবতার পূজা করলে কি লাভ করা যায়