আসক্তি কি?

আসক্তি কি?

 আসক্তি বলতে কি বুঝায়


আসক্তি শব্দটির সঙ্গে প্রায় সকলেই পরিচিত। আসক্তি অর্থ গভীর অনুরাগ। প্রত্যেকেই কোনো না কোনো বিষয়ের প্রতি আসক্ত। সেই আসক্তি আমাদের জীবনে কীভাবে কাজ করে তা জানা দরকার। কিছু বিষয়ে আসক্তি আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ, আবার কিছু আসক্তি আমাদের জীবন করতে পারে বিষময়। 


বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের ভালোমন্দ বিচার করতে হয়। আসক্তির ক্ষেত্রেও তা বিচার্য-আমরা কীসের প্রতি আসক্ত হবো। আমরা জন্মের পরপরই কোনো না কোনো বিষয়ের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ি। শিশুরা সামান্য খেলনার প্রতি আসক্ত হয়। আমরা ছোটবেলায় মাত্র পাচঁ টাকার বল পেলেই সন্তুষ্ট হতাম। 


সেসময় পাঁচ টাকাই অনেক মূল্যবান মনে হতো। কারণ পাঁচ টাকা দিয়ে একটি প্লাস্টিকের বল কেনা যেত। সে বয়সে যখন  এই পাঁচ টাকার বল খেলতে খেলতে হারিয়ে বা নষ্ট করে ফেলি, তখন আমরা অনেক কষ্ট পাই। বছরের প্রথম দিনগুলোতে নতুন বই এলেই বইয়ের প্রতি আসক্ত হই। 


আমরা নতুন বইগুলো খুব যত্ন সহকারে পড়ি। বইগুলোতে মলাট লাগাই, যেন ছিড়ে না যায়। আমরা স্কুলের নির্দিষ্ট কিছু বেঞ্চের প্রতিও আসক্ত হেই। প্রতিদিন ঐ একই বেঞ্চে বসা, তাতে না বসতে পারলে কষ্ট পাই। কিছুদিন পর- আমাকে ক্লাসের প্রথম হতে হবে এমন আসক্তি চলে আসে। 


যখন প্লাস্টিকের বল পেলাম, তখন আর সামান্য খেলনার প্রতি আসক্তি থাকে না। যখন পড়াশোনায় মন আসে, তখন বলের কথা মনে থাকে না। এরই মাঝে বন্ধুবান্ধবীর প্রতিও আসক্ত হয়ে পড়ি। পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর ভালো  একটি চাকরি ও প্রমোশনের প্রতি আসক্তি।  


কিছুদিন পর জীবনসঙ্গিনী, সন্তান-সন্ততি, নাতি-নাতনির প্রতি আসক্তি। এভাবে একসময় অবসর প্রাপ্তি। তখন আসক্তি পার্কের বেঞ্চে গিয়ে ঠেকে। একাকি বসে থাকতে ইচ্ছে করে। মৃত্যুশয্যাতেও আমাদের আসক্তি থেকেই যায়। 


আমরা কেবল একটি বিষয়ের প্রতি আসক্তি রেখে সন্তুষ্ট হতে পারি না। সময় বা বয়সের সাথে সাথে আমাদের আসক্তির বিষয় কেন বদলে যায়? যেমন, ছোটবেলায় একদিন একটি প্লাস্টিকের বল না পেলে মনে হতো সেই দিনটিই নষ্ট হলো। এমনকি আমরা প্লাস্টিকের বল না পেলে  তখস সুপারি নিয়ে খেলা শুরু করে দিতাম। 


এভাবে এই আসক্তি এমনভাবে আমাদের চেতনার মধ্যে প্রবেশ করে যে, সহজে তা বের হতে পারে না। নতুন অন্য একটি বিষয়ে আসক্ত হলেও পুরাতন আসক্তিগুলো চেতনাতেই বাসা বেঁধে থাকে। কারণ চেতনা আসক্তির ভিত্তি। অর্থাৎ, আসক্তিগুলো চেতনার ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে থাকে। একটি গ্লাসে ঘোলা জল রাখা হলে কিছুক্ষণ পর সেই জলের ময়লাগুলো গ্লাসের তলায় জমা হয়। কিন্তু নাড়াচাড়া দিলে তা আবার ঘোলা হয়ে যায়। 


তেমনি আমাদের আসক্তিগুলো চেতনার মধ্যে থেকে যায়, কিন্তু যখন স্মৃতি রোমন্থন করি, তখন আবার সেগুলো জেগে ওঠে। মৃত্যুশয্যা পর্যন্ত মানুষের এই আসক্তি থাকে। তখন হয়ত তার খেলনার কথা মনে হবে না, কিন্তু তার ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি, পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধূ-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের কথা মনে পড়বে। 

 

 যদিও আমাদের এই দেহ ভগবদ্ভজনের জন্য দেওয়া হয়েছে, কিন্তু আমরা যদি আসক্তিগুলোকে ধরে রাখি, তবে আত্মা দেহান্তরের সময় আসক্তিগুলোকে প্রবাহিত করে অন্য দেহে নিয়ে যাবে। তখন মৃত্যুকালের ভাব অনুসারে আমরা কুকুর, বিড়াল, শূকর ইত্যাদি দেহ প্রাপ্ত হবো। তাই আসক্তিকে পরিশুদ্ধ করা অত্যন্ত আবশ্যক। জড় আসক্তি ধরে রাখলেই এর জন্য আমাদের অনেক দুঃখ পেতে হবে। 

 

যার পূর্ব জন্মের সংস্কার ততটা ভালো থাকে না, তার আসক্তির স্তর তত পুরু থাকে। আমরা কোন বিষয়ের প্রতি আসক্ত হবো তা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের পরিচয় পরিবর্তনের সাথে সাথে আসক্তির বিষয়ও বদলাতে থাকে। তাই যতক্ষণ না আমাদের প্রকৃত পরিচয় বা স্বরূপ উপলব্ধি করে সেরূপ কার্য না করব, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আসক্তির বিষয় বারংবার বদলাতেই থাকবে। 

 প্রসঙ্গমজরং পাশমাত্মনঃ কবয়ো বিদুঃ। 

স এব সাধুষু কৃতো মোক্ষদ্বারামপাবৃতম্”।। 

      (ভাববত-৩.২৫.২০) 


অর্থাৎ, আসক্তি হচ্ছে আত্মার বন্ধনের কারণ এবং মহাত্মারা তা জানেন। যখন আমাদের সেই একই আসক্তি সাধুদের প্রতি হবে, তখন আমাদের মুক্তির দ্বার উন্মুক্ত হয়ে যাবে। 


তাই আমাদের এই আসক্তির দিক পরিবর্তন করে তা কেবল কৃষ্ণ ও তাঁর ভক্তদের প্রতি নিয়ে আসতে হবে। আমরা গীতায় দেখতে পাই যে, অর্জুন আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি প্রীতিবশত প্রথমে যুদ্ধ করতে রাজি ছিলেন না। 

 

তিনি বলছেন, যারা আমাকে ছোটবেলা থেকে কোলে টিঠে করে মানুষ করেছেন, তাদের আমি কীভাবে হত্যা করব! তখন কৃষ্ণ তাকে আত্মতত্ত্ব জ্ঞান দান করেন যে, প্রতিটি জীব তাঁর নিত্য ও অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনিই সমস্ত কর্মের কর্তা ও ভোক্তা। 


অর্জুন কর্ম না করার যুক্তি দেখালেও  কৃষ্ণ তখন কর্ম করার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি এভাবে অর্জুনকে তার স্বধর্মবিহিত কর্মে উদ্বুদ্ধ করেন। 

তস্মাদসক্তঃ সততং কার্যং কর্ম সমাচর। 

আসক্তো হ্যাচরন্ কর্ম পরমাপ্নোতি পুরুষঃ।। (ভ.গী-৩/১৯) 


অর্থাৎ, “কর্মফলের প্রতি আসক্তি রহিত হয়ে কর্তব্যকর্ম সম্পাদন করো। অনাসক্ত হয়ে কর্ম করার ফলেই মানুষ পরতত্ত্বকে লাভ করতে পারে। এটাই তোমাকে মুক্তি প্রদান করবে। ” 


প্রতিটি জীব স্বরূপত ভগবানের নিত্য দাস। এই স্বরূপ না জানার ফলে আমরা আমাদের আসক্তিকে ভুল ক্ষেত্রে প্রযুক্ত করে রাখি। স্বরূপ উপলব্দি হলে সে আসক্তিই আমাদের ভগবানের সান্নিধ্য লাভে সহায়তা করে এবং তা সম্ভব হয় নিরন্তর সাধুসঙ্গ লাভের মাধ্যমে। 


শ্রীল প্রভুপাদ বলেছেন- সাধু মানে যাঁর ক্ষণিকের সঙ্গ প্রভাবে সর্ব সিদ্ধি লাভ হয়।” কারণ তিনি আমাকে প্রতিনিয়ত স্মরণ করিয়ে দেন যে, আমি শ্রীকৃষ্ণের নিত্য দাস। কৃষ্ণভক্তির অবহেলা করে জড় বিষয়ের প্রতি আসক্ত হওয়ার ফলেই আমরা জন্মজন্মান্তর ধরে দুঃখ ভোগ করছি।  


সাধুগণ আমাদের নির্দেশ দেন, আমরা যেন সেই আসক্তিকে উৎপাটিত করে কৃষ্ণের প্রতি আসক্ত হই। যিনি যত বেশি কৃষ্ণাসক্ত, তিনি তত নিশ্চিন্ত; আর যিনি যত বেশি বিষয়াসক্ত, তিনি তত দুঃখিত। তাই আপনাকেই নির্ধারণ করতে হবে, আপনি জড় বিষয়ে আসক্ত হবেন, নাকি কৃষ্ণে? 


জড় বিষয়ে আসক্ত হলে কেন আপনাকে দুঃখ পেতে হবে, এ প্রসঙ্গে শ্রীল প্রভুপাদ একটি উদাহরণ দিতেন- মনে করুন, আপনার একটি দামি গাড়ি আছে। একদিন তা চালানোর সময় হঠাৎ তাতে আঁচর লেগে যায়। তখন আপনি এমনভাবে প্রতিক্রিয়া করবেন যেন তা আপনারই গায়ে লেগেছে। এমন কেন হয়? কারণ গাড়িটির প্রতি আপনি অত্যন্ত আসক্ত। যিনি যত বেশি বিষয়াসক্ত, তিনি তত বেশি কষ্ট পান। 


বৈষ্ণব কবি শ্রীল কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামী তাই বলেছেন- 

  “দেহ স্মৃতি নাহি যার 

সংসার বন্ধন কাহা তার ।।” 

যার দেহ স্মৃতি নেই, তার আবার দুঃখ কীসের! গাড়ির ঘটনাটি এমন ব্যক্তির বেলায় ঘটলে, তিনি ভাববেন এটা তো গাড়িতেই লেগেছে। তাই শ্রীল প্রভুপাদ বলেছেন “জড় বস্তুর প্রতি আসক্তিকে বলা হয় ‘জড়চেতনা’ এবং শ্রীকৃষ্ণ বা তাঁর ভক্তের প্রতি আসক্তিকে বলা হয় ‘কৃষ্ণভাবনা’। এতএব, চেতনা থেকে কৃষ্ণভাবনায় রূপান্তরিত করার মাধ্যমে পবিত্র করি, তখন আমরা মুক্ত হই।” 

 

সাধুদের প্রতি আসক্তি মানে কৃষ্ণে আসক্তি, আর কৃষ্ণে আসক্তি মানে কৃষ্ণসেবায় আসক্তি। তাই আমাদের আসক্তি জড় বিষয় থেকে কৃষ্ণ বিষয়ে স্থানান্তরিত করতে হবে। যেমন, কৃষ্ণের কাছে অর্জুন প্রথমে যুদ্ধ না করার কথা ব্যক্ত করেন, কেননা ভেবেছিলেন- বিপক্ষের সবাই আমার আত্মীয়-স্বজন। 

 

কিন্তু সেই একই অর্জুন গান্ডীব হাতে যুদ্ধের জন্য উঠে দাঁড়ান। আত্মতত্ত্ব জ্ঞান দানের পর অর্জুনের চেতনার পরিবর্তন হয়। তিনি বুঝতে পারেন যে, সকলেই কৃষ্ণের অবিচ্ছেদ্য অংশাংশ এবং সবকিছুই কৃষ্ণের। যেমন, ব্যাংকের ক্যাশিয়ার প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা গুণেন, কিন্তু তিনি কখনো সেগুলো নিজের মনে করেন না। 

 

কারণ , তিনি জানেন- টাকাগুলো মালিকের, আমার নয়। আমি কর্মচারী মাত্র। তেমনি, এজগতের সবকিছুর প্রকৃত মালিক পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, কোনোকিছুই আমাদের নয়- একথা জেনে বুদ্ধিমান ব্যক্তি কখনো জড়জগতের কোনোকিছুর প্রতি আসক্ত হন না, 

 

বরং ভগবানের সম্পত্তি জেনে অনাসক্ত হয়ে সবকিছু তাঁর সেবায় নিযুক্ত করেন। ফলে তিনি কখনো জড়বস্তুর অপ্রাপ্তিতে দুঃখ অনুভব করেন না। কিন্তু আমরা ছোটবেলা থেকেই আমার আমার বলে জড় বিষয়ের প্রতি এতই আসক্তি হয়ে পড়েছি যে, তা আর চেতনা থেকে বাদ দিতে পারছি না। 

 

তাই এ আসক্তির শুরু শিশুকাল থেকেই হয়েছে। জড় আসক্তি কমিয়ে কৃষ্ণ ভক্তদের প্রতি আসক্তি বৃদ্ধির ফলে আমাদের সকল প্রকার দুঃখ নিরসন হবে। 

 

এক রাজবাড়িতে রাজকন্যার বিয়ে। সবাইকে নৌকায় করে নদী পাড় হতে হবে। নৌকায় সকলে আনন্দে মেতে আছে। ভোরবেলা রাজা দেখছেন, আর কতদূর পথ বাকি আছে। কিন্তু রাজার মনে হচ্ছে তারা এখনো সেই একই ঘাটে রয়ে গেছেন। 

 

তখন রাজা মাঝিকে জিজ্ঞেস করলে দুজন মাঝি ঘর্মাক্ত শরীরে বলল- “আমরা তো সারারাতই অনেক শক্তি দিয়ে দাঁড় বাইলাম। আমরা তো চেষ্টা করে যাচ্ছি।”  একথা শুনে রাজা আরো ভালো করে পরীক্ষা করে দেখলেন যে, তারা নৌকায় নোঙরই তোলেননি। কী করে নৌকা গন্তব্যে পৌঁছাবে! তেমনি আমাদের জড় আসক্তিরূপ নোঙর যদি না তুলি, তবে ভক্তি পদে আমাদের অগ্রগতি হবে না।  

 

আমাদের লক্ষ্যে আমরা পৌছাতে পারবো না। যদি জড় বিষয়ের প্রতি আমাদের সামান্যতম আসক্তিও থাকে, তবে আমাদের অনেক দুঃখ পেতে হবে। যেমন, মহারাজ ভরত একটি হরিণ শিশুর প্রতি আসক্ত হয়েছিলেন, যার ফলে তাকে অনেক কষ্ট পেতে হয়েছিল। 

 

এ জড়জগৎ আমাদের প্রকৃত আলয় নয়। তাই এ জগতের প্রতি আসক্তি রাখলে আমাদের এখানেই থাকতে হবে। 

“পিশাচী পাইলে যেমন মতিচ্ছন্ন হয়।

মায়াবদ্ধ জীবের হয় সেই ভাবোদয়।।” 

যুবক-যুবতী পরস্পরকে ভালোবেসে ব্যর্থ হলে কখনো কখনো তারা আত্মহত্যা করতেও দ্বিধা বোধ করে না। কারণ তাদের ভালোবাসার মানুষটির প্রতি প্রবলভাবেক আসক্ত থাকে। ফলে প্রিয় মানুষটির কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে নিজের জীবনকেই প্রত্যাখান করে। 

 

এটা নির্বুদ্ধিতা মাত্র। যদি তারা কারো প্রতি এত আসক্ত না হতো, তবে তাদের জীবনকে হারাতে হতো না। অর্থাৎ, জড় বিষয়ের প্রতি আমরা যত বেশি আসক্ত হবো, তত বিপদে পড়তে হবে। তাই বুদ্ধিমান ব্যক্তি কখনো এমন কাজ করেন না। গৌড়ীয় বৈষ্ণবাচার্যবর্গের অন্যতম শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর তা-ই বলেছেন- 

অতএব মায়া মোহ ছাড়ি বুদ্ধিমান । 

নিত্য তত্ত্ব কৃষ্ণভক্তি করহ সন্ধান।।

 বুদ্ধিমান ব্যক্তি কেবল নিত্য বিষয়ে আসক্ত হবেন, অনিত্য জড় বিষয়ে নয়। এ জগতে সবই পরিবর্তনশীল। তাই আমাদের পরমেশ্বর ভড়বান ও তাঁর শুদ্ধ ভক্তদের প্রতি আসক্ত হওয়া উচিত। 

 

তখন আনন্দাম্বুধিবর্ধনম্- আমাদের আনন্দের সীমা থাকবে না। নিরানন্দ দূরে গেল, আনন্দের সীমা নাই। কিন্তু একই আসক্তি যখন জড় বিষয়ে হবে, তখন আমরা বলতে বাধ্য হবো- সব আনন্দ দূরে গেল, দুঃখের সীমা নাই। শুধু দুঃখ, আর দুঃখ। 

 

এ জগতের যেকোনো বিষয়, বস্তু বা ব্যক্তি যেখানেই ভরসা করবেন, সেখান থেকেই আপনি দুঃখ পাবেন। তাই আপনাকেই পছন্দ করতে হবে আপনি কী করবেন? আপনি সাধু-গুরু-কৃষ্ণে আসক্ত হবেন, নাকি জাগতিক কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর প্রতি? 

 

জড়জগৎ আপনাকেই পছন্দ করতে হবে আপনি কী করবেন? আপনি সাধু-গুরু-কৃষ্ণে আসক্ত হবেন, নাকি জাগতিক কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর প্রতি? জড়জগৎ আপনাকে দুঃখ দেবে, আর কৃষ্ণ থেকে নিরন্তর আনন্দ পাবেন। আমি ইচ্ছ করেই দুঃখ পাব, নাকি প্রকৃত পরিচয়ের সাথে যুক্ত হবো? 

 

আমি প্রকৃত পক্ষে আত্মা। আমরা সকলেই ভগবানের নিত্য অংশ। হাতের আঙ্গুল যতক্ষণ হাতের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তার মূল্য ততক্ষণই রয়েছে। হাত থেকে বিচ্ছিন্ন হলে তা মূল্যহীন। তেমনি আমরাও ভগবানের নিত্য অংশ। 

 

আমরা যদি ভগবান থেকে আলাদা থাকি, আমরাও মূল্যহীন হয়ে যাব। আমাদের জীবন অর্থহীন হয়ে যাবে। আর যদি আমরা ভগবানের সঙ্গে তথা ভগবৎ-সেবায় যুক্ত থাকি, তবে আমাদের জীবন হয়ে উঠবে অর্থবহ। 

 

আরও পড়ুন 







 
 

 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url