গােপীদের কৃষ্ণ বিরহ-শ্রীমদ্ভাগবত কথা


 গােপীদের কৃষ্ণ বিরহ

বৃন্দাবনের গােপিকারা শ্রীকৃষ্ণের প্রতি এতই আসক্ত ছিলেন যে, তারা কেবল রাত্রিবেলা তার সঙ্গে রাসনৃত্যে যােগদান করেই সন্তুষ্ট ছিলেন না, তারা দিনের বেলাতেও তার সঙ্গলাভের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকতেন।

 

 শ্রীকৃষ্ণ যখন তাঁর গােপসখা এবং গাভীদের সঙ্গে গােচারণে যেতেন, গোপিকারা তখন দৈহিকভাবে তাঁর সঙ্গে যেতে পারতেন না, কিন্তু তাদের হৃদয় তার সঙ্গে যেত। তাঁদের হৃদয় সব সময় তার সঙ্গে থাকত বলে, তারা গভীর বিরহ অনুভূতির মাধ্যমেও তাঁর সঙ্গসুখ অনুভব করতেন। 

 

এই গভীর বিরহ উদ্দীপ্ত করার শিক্ষাই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এবং তাঁর একান্ত অনুগত পার্ষদ ষড় গােস্বামীরা দিয়ে গেছেন। আমরা যখন দৈহিকভাবে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গলাভ করতে পারি না, তখন ব্রজগােপিকাদের মতাে বিরহানুভূতির মাধ্যমে তার সঙ্গ করতে পারি।

 

 কৃষ্ণের অপ্রাকৃত নাম, রূপ, গুণ, লীলা, পরিকর ইত্যাদি সবই তার থেকে অভিন্ন। ভগবদ্ভক্তির নটি রূপ রয়েছে, তার মধ্যে বিরহজনিত ভগবদ্ভক্তি, কৃষ্ণভক্তির সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত ব্রজগােপিকারা রয়েছেন। 

 

এই বিরহ বর্ণনা করে গােস্বামী অষ্টকে শ্রীনিবাস আচার্য তাদের বন্দনা করে বলেছেন যে, তাঁরা রাজৈশ্বর্য পরিত্যাগ করে, রাজাদের সঙ্গ পরিত্যাগ করে, বৃন্দাবনে গিয়েছিলেন এবং সেখানে দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে অতি দীনভাবে জীবন যাপন করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা ব্রজগােপিকাদের ভাবে মগ্ন থেকে প্রতিনিয়ত দিব্য আনন্দ অনুভব করতেন।

 

তেমনই, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যখন জগন্নাথ পুরীতে ছিলেন, তখন তার ভাব ছিল কৃষ্ণবিরহে রাধারাণীর মতাে। যে সমস্ত কৃষ্ণভক্ত ব্রহ্ম-মাধ্ব-গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের ধারায় তাদেরও উচিত এইভাবে কৃষ্ণবিরহ অনুভব করা, তাঁর অপ্রাকৃত রূপ আরাধনা করা এবং তার শিক্ষা, তাঁর লীলা, গুণ, পরিকর এবং তার বৈশিষ্ট্য আলােচনা করা। 

 

সদগুরুর কর্তব্য হচ্ছে ভক্তকে ভগবদ্ভক্তির চরম স্তরে উন্নীত করা। নিরন্তর ভগবানের বিরহ অনুভব করে ভগবানের সেবায় যুক্ত হওয়াই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃতের পরম সার্থকতা।

 

গােপিকারা পরস্পরের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের কথা আলােচনা করে বলতেন, “হে সখী! তােমার কি মনে পড়ে, কৃষ্ণ কিভাবে বাম কনুইয়ের উপর ভর দিয়ে মাটিতে শুয়ে থাকে, তার মাথা তখন বাম হাতের উপরে থাকে।

 

তার কোমল অঙ্গুলির দ্বারা সে যখন বাঁশি বাজায়, তখন তার ভ্র-যুগল নাচতে থাকে এবং মধুর মুরলীধ্বনির প্রভাবে এমন সুন্দর এক পরিবেশের সৃষ্টি হয় যে, বিমানে করে পত্নীসহ গগনমার্গে বিচরণ করতে করতে স্বর্গের দেবতারা স্তম্ভিত হয়ে যান। বিমানে উপবিষ্ট পত্নীরা তখন তাদের সঙ্গীতের এবং শিল্পকলার অক্ষমতা অনুভব করে লজ্জিত হন। শুধু তাই নয়, তখন তারা অত্যন্ত কামার্তা হয়ে পড়েন এবং তাদের কেশপাশ এবং বস্ত্র স্বলিত হয়।

অন্য একজন গােপী বলেন, “হে সখীগণ! কৃষ্ণ এত সুন্দর যে, লক্ষ্মীদেবী নিরন্তর তার বক্ষে বিরাজ করে। তার ভক্তদের হৃদয়ে আনন্দের সঞ্চার করার জন্য কৃষ্ণ তার বাঁশি বাজায়। তাপক্লিষ্ট জীবের সে-ই হচ্ছে পরম বন্ধু। 

 

সে যখন তার বাঁশি বাজায়, তখন বৃন্দাবনের গাভী এবং অন্যান্য পশুরা গােচারণে তৃণ মুখে নিয়ে তা খেতে ভুলে যায়, তাদের কান খাড়া হয়ে ওঠে এবং তারা স্তম্ভিত হয়ে যায়। তাদের দেখে আর তখন বােঝা যায় না যে, তারা সজীব। তাদের দেখে তখন মনে হয়, তারা যেন পটে আঁকা ছবি।

 

কৃষ্ণের মুরলীধ্বনি এতই মধুর যে, তার সুরে পশুপাখিরাও মুগ্ধ হয়ে যায়, আর আমাদের কি কথা।” অপর এক গােপী বলেন, সখীগণ! কেবল সজীব পশুপাখিরাই নয়, নদী, সরােবর আদি বৃন্দাবনের নির্জীব বস্তুরাও শিখিপুচ্ছশােভিত বৃন্দাবনের ধাতু দিয়ে রঞ্জিত শ্যামসুন্দর কৃষ্ণকে দেখে স্তম্ভিত হয়ে পড়ে। বনফুলের মালায়। শােভিত তাকে দেখে তখন মনে হয় যেন একজন নায়ক। 

 

বলরামসহ সে যখন খেলা করে এবং তার বাঁশি বাজিয়ে গাভীদের আহ্বান করে, তখন যমুনা স্থির হয়ে যায় এবং বায়ুতাড়িত শ্রীপাদপদ্মের ধূলিকণার আশায় প্রতীক্ষা করে। যমুনাও আমাদের মতাে দুঃখিনী; কেননা সেও এখন কৃষ্ণকৃপা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। 


তার গতি স্তব্ধ হয়ে গেছে, এবং তার লহরীগুলি স্থির হয়ে গেছে, ঠিক যেমন কৃষ্ণের বিরহ-বেদনায় আমরা কাঁদতে ভুলে গেছি।” কৃষ্ণের বিরহে গােপিকারা নিরন্তর অশ্রুপাত করতেন, কিন্তু কখনও কখনও যখন তারা কৃষ্ণের আগমনের প্রতীক্ষা করতেন, তখন তাদের কান্না থেমে যেত। যখন তারা দেখতেন যে কৃষ্ণ আসছে না, তখন তারা আবার গভীর নৈরাশ্যে কাঁদতে শুরু করতেন। কৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান।

 

তিনি বিষ্ণুরও উৎস, এবং গােপবালকেরা হচ্ছেন স্বর্গের দেবতা। বিষ্ণু সর্বদাই শিব, ব্রহ্মা, ইন্দ্র, চন্র আদি সমস্ত দেবতাদের দ্বারা পরিবৃত হয়ে নিরন্তর পূজিত হন। তিনি যখন বৃন্দাবনের বনে ভ্রমণ করতে করতে গােবর্ধন পর্বতের দিকে যেতেন, তখন তার সঙ্গে গােপবালকেরাও থাকত। যেতে যেতে তার গাভীদের আহ্বান করার জন্য তিনি বাঁশি বাজাতেন। তার সঙ্গপ্রভাবে বনের বৃক্ষ, লতা, তৃণ, গুল্ম সবই তৎক্ষণাৎ কৃষ্ণভাবনাময় হয়ে উঠত।  

কৃষ্ণভাবনাময় ব্যক্তি সব কিছুই কৃষ্ণকে উৎসর্গ করেন। যদিও বৃক্ষ ও লতাগুল্মের চেতনা ততটা উন্নত ছিল না, কিন্তু কৃষ্ণ এবং তার সখাদের সঙ্গপ্রভাবে তারাও কৃষ্ণভাবনার অমৃত লাভ করেছিল। তখন তারা তাদের সর্বস্ব, তাদের ফল, ফুল, মধু সব কিছু কৃষ্ণকে উৎসর্গ করত।

শ্রীকৃষ্ণ যখন যমুনার তীর দিয়ে হেঁটে যেতেন, তখন দেখা যেত তার ললাটে সুন্দর তিলক শােভা পাচ্ছে, তার গলায় শােভা পাচ্ছে বনমালা, এবং তাঁর শ্রীঅঙ্গ চন্দন ও তুলসী মঞ্জরীর দ্বারা শােভিত। ভ্রমরেরা তখন বাতাসে অমৃতের সৌরভ আগ্রাণ করে সেই অমৃত আস্বাদন করার জন্য পাগল হয়ে উঠত। ভ্রমরের গুঞ্জন ধ্বনিতে আনন্দিত হয়ে শ্রীকৃষ্ণ তাঁর বাঁশি বাজাতেন, এবং এই মিলিত শব্দ তরঙ্গ এতই মধুর ছিল যে, তা শুনে জলচর, বক, হংস এবং অন্যান্য পক্ষীরা মুগ্ধ হয়ে যেত। জলক্রীড়া করতে ভুলে গিয়ে এবং উড়তে ভুলে গিয়ে তারা স্তম্ভিত হয়ে যেত। চক্ষু মুদ্রিত করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ধ্যান করে তারা তার উপাসনা করত।

 

একজন গােপিকা বললেন, “হে সখী! কৃষ্ণ এবং বলরাম সুন্দর কর্ণভূষণ এবং মুক্তার মালায় শােভিত। গােবর্ধন পর্বতের চূড়ায় তারা আনন্দে মগ্ন। আর কৃষ্ণ যখন বাঁশি বাজায়, তখন সকলেই দিব্য আনন্দে মগ্ন হয়, সমস্ত জগৎ তখন মুগ্ধ হয়। সে যখন তার বাঁশি বাজায়, তখন তার ভয়ে মেঘের গর্জন স্তব্ধ হয়ে যায়। সেই বংশীধ্বনির বিঘ্ন না ঘটিয়ে তারা তখন মৃদু মৃদু শব্দে তাদের সখা কৃষ্ণকে তাদের অভিনন্দন জানায়।”

 শ্রীকৃষ্ণকে মেঘেদের বন্ধু বলে মনে করা হয়, কেননা তারা উভয়েই বিচলিত মানুষদের সন্তষ্টিবিধান করেন। প্রখর রৌদ্রে মানুষ যখন তপ্ত হয়, তখন বারিবর্ষণ করে মেঘ তাদের তৃপ্ত করে। তেমনই মানুষ যখন এই জড় জগতের ভবমহাদাবাগিতে দগ্ধ হয়, শ্রীকৃষ্ণ তখন তাদের পরিত্রাণ করেন।

 

 মেঘ এবং শ্রীকৃষ্ণ উভয়েরই অঙ্গকান্তি একরকম, সেজন্যও তাদের বন্ধু বলে মনে করা হয়। শ্রেষ্ঠ বন্ধুকে অভিনন্দন জানিয়ে মেঘেরা কেবল বারিবর্ষণই করে না, তারা ছােট ছােট ফুল বর্ষণ করে কৃষ্ণের মস্তক আচ্ছাদন করে তাকে প্রখর রৌদ্র থেকে আচ্ছাদিত করে।

 

একজন গােপী মা যশােদাকে বললেন, “হে মাতঃ! সমস্ত গােপবালকদের মধ্যে আপনার পুত্র অত্যন্ত সুদক্ষ। সে সব রকমের কলায় পারদর্শী—কিভাবে গাভী চরাতে হয়, কিভাবে বাঁশি বাজাতে হয় এই সমস্ত বিষয়েই সে অত্যন্ত সুদক্ষ।

 

 সে নিজে নিজেই সঙ্গীত রচনা করে, এবং সেই সঙ্গীত প্রকাশ করার জন্য সে তার মুখে বাঁশি তুলে নেয়। সে যখন বাঁশি বাজায়, তা সে প্রভাতেই হােক বা সায়াহ্নেই হােক, তখন শিব, ব্রহ্মা, ইন্দ্র, চন্দ্র আদি সমস্ত দেবতারা নতমস্তকে গভীর মনােযােগের সঙ্গে তা শুনতে থাকে। যদিও তারা অত্যন্ত সুদক্ষ এবং জ্ঞানী, তবুও তারা মনােযােগের সঙ্গে তা শ্রবণ করে তা উপলব্ধি করার চেষ্টা করেন, এবং তার ফলে তারা মুগ্ধ হয়ে যান।


আরেকজন গােপী বলেন, “কৃষ্ণ যখন গাভীসহ ঘরে ফিরে আসে, তখন ধ্বজ, বজ্র, অঙ্কুশ এবং পদ্মশােভিত তার পদচিহ্ন গাভীর ক্ষুরজনিত ধরিত্রীর সমস্ত বেদনার উপশম করে। তার চলার ভঙ্গি এত সুন্দর! কিন্তু আরও সুন্দর ভঙ্গিতে সে তার বাঁশি বহন করে। 

 

তাকে দেখামাত্রই তার সঙ্গসুখ লাভের জন্য আমাদের হৃদয় কামার্ত হয়। সেই সময় আমাদের গতি স্তব্ধ হয়ে যায়। আমরা তখন বৃক্ষের মতাে স্থির নিশ্চল হয়ে পড়ি, এমন কি তখন আর আমাদের মনে থাকে না যে আমাদের দেখতে কেমন।”

 

শ্রীকৃষ্ণের হাজার হাজার গাভী ছিল, এবং তাদের গায়ের রং অনুসারে তাদের বিভিন্ন নামে ডাকা হত। তিনি যখন গােচারণ থেকে ফিরে আসতেন, তখন সমস্ত গাভীরা একত্রিত হতাে। বৈষ্ণবেরা যেমন ১০৮টি গুটিকায় ভগবানের নাম করেন, যা হচ্ছে ১০৮টি গােপিকার প্রতীক, তেমনই শ্রীকৃষ্ণও তাঁর গাভীদের ১০৮টি শ্রেণীতে বিভক্ত করেছিলেন।

 

একজন গােপিকা তার এক সখীকে বললেন, "কৃষ্ণ যখন ফিরে আসে, তখন তার গলায় তুলসীর মালা শােভা পায়। এক গােপসখার কাঁধে হাত রেখে সে। তার অপ্রাকৃত বাঁশি বাজাতে থাকে। বীণাধ্বনির মতাে সেই বাঁশির সুরে মুগ্ধ হয়ে কৃষ্ণসার মৃগপত্নী কৃষ্ণের কাছে এসে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে এবং তার দেহ, গেহ সব কিছুর কথাই ভুলে যায়। কৃষ্ণের অপ্রাকৃত গুণসমুদ্রের প্রভাবে আমরা যেমন মুগ্ধ হয়ে পড়ি, সেই হরিণীও তেমনই কৃষ্ণের বাঁশির সুরে মুগ্ধ হয়ে যায়।


অপর একজন গােপী মা যশােদাকে বলেন, মাতা, আপনার ছেলে যখন ঘরে ফিরে আসে, তখন কুন্দ ফুলের কুঁড়ি দিয়ে সে নিজেকে সাজায়, এবং তার আনন্দ বিধানের জন্য তার বাঁশি বাজায়। দক্ষিণ সমীর তখন চতুর্দিকে সুগন্ধ এবং শীতলতা বিতরণ করে সুখের সঞ্চার করে। 

 

গন্ধর্ব এবং সিদ্ধরা শিঙ্গা ও ভেরী বাজিয়ে কৃষ্ণের চরণে তাদের প্রার্থনা নিবেদন করেন। ব্রজবাসীদের প্রতি কৃষ্ণ অত্যন্ত কৃপাময়, সে যখন তার গাভী এবং গােপসখাসহ ফিরে আসে, তখন মনে পড়ে যায় যে, সে গােবর্ধন পর্বত ধারণ করেছিল। তখন ব্রহ্মা, শিব আদি মহান দেবতারাও তাদের সন্ধ্যা-বন্দনা নিবেদন করার জন্য নেমে আসেন এবং গােপবালকদের সঙ্গে তারাও কৃষ্ণের মহিমা কীর্তন করতে থাকেন।”

"সমুদ্রের গর্ভ থেকে যেমন চন্দ্রের জন্ম হয়েছিল, তেমনই দেবকীর গর্ভ থেকে কৃষ্ণচন্দ্রের উদয় হয়। সে যখন সন্ধ্যাবেলায় গৃহে প্রত্যাবর্তন করে, তখন তাকে ক্লান্ত বলে মনে হয়, কিন্তু তবুও তার মঙ্গলময় উপস্থিতির দ্বারা সে বৃন্দাবনের অধিবাসীদের আনন্দ-বিধান করার চেষ্টা করে। 

 

বনমালায় শােভিত হয়ে কৃষ্ণ যখন ফিরে আসে, তখন তাকে অত্যন্ত সুন্দর দেখায়। মত্ত মাতঙ্গের মতাে ধীর মন্থর পদক্ষেপে বৃন্দাবনে কৃষ্ণ তার ঘরে প্রবেশ করে। তার আগমনে বৃন্দাবনের প্রতিটি পুরুষ, স্ত্রী এবং গাভী দিনের প্রচণ্ড তাপের কথা ভুলে যায়।"

 

বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণের অনুপস্থিতির সময়ে ব্ৰজগােপিকারা অপ্রাকৃত লীলাবিলাস এবং কার্যকলাপের কথা স্মরণ করতেন। তা থেকে আমরা শ্রীকৃষ্ণের আকর্ষণ সম্বন্ধে কিছুটা ধারণা করতে পারি। সকলেই এবং সব কিছুই শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আকৃষ্ট আকর্ষণী শক্তির এই হল সম্যক বর্ণনা।

 

যারা কৃষ্ণভাবনার অমৃততে মগ্ন হতে চেষ্টা করছেন, তাদের কাছে গােপিকাদের এই সমস্ত দৃষ্টান্ত খুবই শিক্ষাপ্রদ। শুধুমাত্র শ্রীকৃষ্ণের অপ্রাকৃত লীলাবিলাসের কথা স্মরণ করে অতি সহজেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সান্নিধ্য লাভ করা যায়। 

 

ভালবাসার প্রবণতা প্রত্যেকের মধ্যেই আছে। কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনের মূল কথা হল, সমস্ত ভালবাসা যেন শ্রীকৃষ্ণে অর্পিত হয়। নিরন্তর হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করার ফলে এবং শ্রীকৃষ্ণের অপ্রাকৃত লীলাবিলাস স্মরণের মাধ্যমে যে কেউ সম্যকরূপে কৃষ্ণভাবনামৃত লাভ করতে পারেন এবং জীবনকে মহিমান্বিত সার্থক করে তুলতে পারেন।

 

আরও পড়ুন

 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
৩২. অক্রুরের বৃন্দাবনে আগমন
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url